আসুন সব শিক্ষকরা মিলে একদিন রাস্তায় দাড়াই, বিবৃতি দেই: আসিফ নজরুল
গতকাল আমাদের ছাত্রদের উপর যখন হামলা হচ্ছিল, আমি দৌড়ে বের হতে নিয়েছিলাম। আমার স্ত্রী চিৎকার করে বলল; মাথা খারাপ তোমার! আমি বললাম, না যেতে হবে। তারপর মনে হলো, এই বিশ্ববিদ্যালয়, এই সরকার তো চিনি আমি। বের হয়ে কলাভবনে যাওয়ার আগেই আমাকে মেরে শুইয়ে ফেলা হবে। তারপর প্রচারণা চলবে কোটার এই আন্দোলনের পেছনে আসলে আমিই ছিলাম। কেউ কেউ প্রশ্ন করবে আসলে কি উদ্দেশ্যে সেখানে গেলাম আমি!
এসব ভেবে ভেবে অস্থির হয়েছি, আবার নিজেকে ধিক্কারও দিয়েছি,। উপাচার্য স্যারকে বারবার ফোন করেছি, প্রক্টরকে খুঁজেছি, সাংবাদিকদের বলেছি। একটু পর দেখি ছাত্রলীগের ঢা.বি সভাপতি ইতিমধ্যে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিতে আমাকে দায়ী করেছেন! আমি ভাবলাম তাহলে অন্তত কয়েকজন মিলে যাই। প্রগতিশীল তিনজন অধ্যাপককে ফোন করলাম। একজন ধরলেন না, একজন বললেন তিনি নেই ক্যাম্পাসে, আরেকজন বলল, এখন যাওয়া ঠিক হবে না। আমার অস্থিরতা বাড়তে থাকে। ফেসবুকে অনেক কিছু লিখলাম। রাতে আর না পেরে ঢা, বি. মেডিকেলে আহত ছাত্র ছাত্রীদের দেখতে গেলাম। কিছুটা অপরাধবোধ কমলে ঘুমাতে পারলাম অনেক রাতে।
সকালে উঠে মনে হচ্ছে, ধীরে ধীরে আমিও কাপুরুষে পরিণত হচ্ছি সম্ভবত। আগে কতোবার ছাত্রদের পাশে দাড়ালাম, কখনো একদম একাই দাঁড়িয়েছিলাম। কাল কেন পারলাম না? আমাদেরকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. শহীদ শামসুজ্জোহার উদাহরণ দেন কেউ কেউ। উনার মতো আমরা হতে পারিনি। তবে কেউ কেউ কিছুটা হলেও প্রতিবাদ করেছি আগে বহুবার। কিন্তু পাশে থাকা মানুষ কম পেয়েছি, এখন আরো কমছেন তারা। বহুবছর ধরে একসাথে কাজ করেছি, এমন কেউ কেউ এখন সামান্য বিবৃতি দিতেও ভয় পান।
ফেসবুকে তো অনেকে লেখেন। আসেন না নিজেরা সবাই মিলে দাড়াই একদিন রাস্তায়। অন্তত একটা বিবৃতি দেই।
ফেসবুক থেকে নেয়া