বিশ্ব মা দিবসে রাবিপ্রবিয়ানদের ভাবনা
মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস। একা হাতে সংসারের যাবতীয় কাজসহ বাইরের দুনিয়াও সমান তালে চালান মা। নানা ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে মায়ের জীবনের সংগ্রাম ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতার বিষয়ে রাবিপ্রবিয়ানদের নানা চিন্তা ভাবনা ও অজানা গল্প উঠে এসেছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশেষ প্রতিবেদন "বিশ্ব মা দিবসে" রাবিপ্রবিয়ানদের ভাবনার মাঝে দিয়ে।
"পৃথিবীতে একমাত্র নিঃস্বার্থ ভাবে বিনা পরিশ্রমে কাজ করা ব্যক্তি হলো মা। যিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সন্তানকে আগলে রাখেন। প্রচণ্ড ঝড়, বৃষ্টি কিংবা কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সন্তানকে পরিচালিত করেন সুপথে। যুগ থেকে যুগান্তরে কত কিছুই তো পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তনের এই সময়েও বাঙালি মায়েদের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রটি এখনো চির প্রাচীন –চির আধুনিক। সন্তানদের পুষ্টি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাদের চেয়ে জ্ঞানী, তাদের অভিজ্ঞতার তুলনা অন্য কোন বিশেষজ্ঞের ধারের কাছে নেই। সন্তানদের যত্নের ক্ষেত্রে মায়েরা দৃঢ় স্পাতের মতো শক্ত। মায়েরা সন্তানের স্বপ্ন বুননের কারিগর পাশাপাশি স্বপ্ন পূরণের পথ প্রদর্শক। আশ্চর্য হলেও সত্যি আমাদের আবহমান কাল থেকে চলে আসা সমাজ ব্যবস্থায় গালাগালের কুৎসিত শব্দ সরাসরি নিঃস্বার্থ এই ব্যক্তিকে আক্রমণ করেই করা হয়। যা শুধু সমাজ ব্যবস্থা নয় বরং আমাদের মানসিকতার ও নোংরা বহিঃপ্রকাশ। মাকে নিয়ে এসব কুরুচিপূর্ণ শব্দ বা বাক্য বন্ধ না করা গেলে জাতি হিসেবে মাকে তাঁর প্রাপ্ত সম্মান দেয়া যাবে না। মা দিবসে শুধু একটাই চাওয়া পৃথিবীর সব মায়েরা ভালো থাকুক। বৃদ্ধাশ্রমে পড়ুক শিকল-তালা।"
আহ্সান হাবীব
সিএসই বিভাগ, ৪র্থ বর্ষ, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
"বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মায়ের গুরুত্বটা বোঝা যায় সবচেয়ে বেশি। এই পৃথিবীতে একজন ব্যক্তি আছেন, যিনি সন্তানের সকল সুখ-দুঃখ আগেভাগেই যেন বুঝে যান। আর তিনিই হলেন মমতাময়ী ও স্নেহময়ী মা। 'মা' শব্দটি আদতেই ছোট্টো একটি শব্দ হলেও এর বিশালতা অতুলনীয়। এই নির্মম জগতে এতটুকু স্নেহের বহিঃপ্রকাশের একমাত্র মাধ্যম মা। এখানকার শিক্ষার্থীদের অনেকেই শৈশবেই মায়ের অকাল মৃত্যুর কারণে মাতৃস্নেহ হতে বঞ্চিত হন। তাছাড়াও দূরদূরান্ত হতে আগত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার কাজে মায়ের আঁচল ছেড়ে আসার ব্যাপারটা নিতান্তই কষ্টের। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এক একটি ছুটি শিক্ষার্থীদের জীবনে আনন্দের হাসি ফুটিয়ে তোলে, কারণ তারা স্বল্প সময়ের জন্য হলেও নিজেদের স্বজনদের কাছে ফিরে যেতে পারেন। মা তখন সন্তানের বাড়ি ফেরার তারিখের দিকে মুখিয়ে থাকেন। মা, যিনি রান্নাবান্না থেকে শুরু করে সন্তানের দেখাশোনা তথা সম্পূর্ণ পরিবারের দেখভালের দায়িত্ব গ্রহণ করেন,তিনি নি:সন্দেহে একজন বিরাট জাদুকর। তাঁর স্পর্শ সন্তানের যেকোনো কঠিন রোগের উপশম। জীবনে চলার পথে সন্তানেরা যেকোনো সমস্যা কিংবা বিপদেই মা-বাবার সাহায্য পেয়ে থাকেন। তবুও ছোটোবেলা হতে বাবার চেয়েও মায়ের সাথে সন্তানের মেলামেশা কিংবা সম্পর্কটা খানিক হলেও গভীর। 'মা দিবস' তাই জানাই সকল মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও সম্মান।"
আদিত্য চৌধূরী
এফইএস বিভাগ, ২য় বর্ষ, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আরো পড়ুন: সন্তানের নিরাপদ আশ্রয় মা
"মা, শব্দটি অনেক ছোটো হলেও এই ছোট্ট শব্দটি আমাদের জীবনে এক তাৎপর্যপূর্ণ অর্থ বহন করছে। আমাদের সকলের জীবনে মায়ের ভূমিকা, ত্যাগ, মমতা অসীম। নয় মাস গর্ভে ধারণ করার পরেও সারাজীবন তিনি তার সন্তানদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম আর যে ভালোবাসা বিলিয়ে দেন তা খুব কম মানুষই উপলব্ধি করতে পারে। জন্মের পর থেকে একটি শিশু যখন কিছুই করতে পারতো না, ঠিক সেইসময় থেকে শুরু করে মা ছিল, বড় হয়েও মা থেকে যান। তিনিই কখনো তার সন্তানদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন না। আমাদের কঠিন পরিস্থিতির সহযোদ্ধা আমাদের মা। মায়ের ত্যাগ এবং ভালোবাসার বিনিময় কোনোকিছু দিয়েই পূরণ করা সম্ভব না। মায়ের জন্য আমাদের প্রতিটি দিনই হোক 'মা দিবস' এর মত।"
ফাইরুজ মেহেদী
এফইএস বিভাগ, ২য় বর্ষ, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
"পৃথিবীর নিঃস্বার্থ মানুষের মাঝে প্রথম যে নাম উঠে আসে তিনিই হচ্ছেন 'মা'। মায়ের স্নেহ, সহানুভূতি এবং শিক্ষা ব্যক্তি জীবনের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। তার অসীম উৎসাহ এবং সমর্থনে আমরা জীবনের সমস্ত জায়গায় অগ্রসর হতে পারি। তার প্রেম এবং করুণার অবাধ আমাদের শক্তির উৎস হয়ে উঠে, প্রত্যেক দুঃখের সাথে সাথে। মা হলো অনুভূতির মালিকানা, আশার আলো, একজন নিরাপদ সীমান্ত যেখানে আমরা সবসময় ফিরে যেতে পারি। মা একটি প্রশান্তি, যেখানে আমরা আমাদের সব সমস্যাগুলি ভাগ করতে পারি কোন প্রকার স্বার্থ ছাড়াই। মা আমাদের জীবনে সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ। মা দিবসে তাই পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি সম্মান ও বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো।"
আকলিমা আকতার
এফএমআরটি বিভাগ, ১ম বর্ষ, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।