আন্তর্জাতিক আদালতকে অস্বীকার ও ইসরায়েলের আগ্রাসন
স্মরণকালের ভয়াবহতম গণহত্যা চলছে ফিলিস্তিনে। ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করছে গাজার অসহায় নারী, শিশু বয়স্ক-বৃদ্ধদের। এমন কী স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরের মতো স্থাপনাগুলোও রেহাই পাচ্ছে না। সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী জোর দাবি উঠেছে ইসরায়েলের বর্বরোচিত এই গণহত্যা বন্ধের জন্য। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) এরই মধ্যে একাধিক অস্থায়ী আদেশ জারি করেছে ইসরায়েলের বিপক্ষে।
আন্তর্জাতিক আদালত বলছে দ্রুত তাদেরকে গণহত্যা বন্ধ করতে হবে এবং গাজায় আরও মানবিক সহায়তার অনুমতি দিতে হবে। আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য হলেও দুর্ভাগ্যবশত, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান তারা জানায়নি। অথচ দ্রুত যুদ্ধবিরতিই ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ করার একমাত্র উপায়।
জাতিসংঘের সংস্থাটি ইসরায়েলের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা একটি মামলায় গাজায় গণহত্যার অভিযোগে অন্তবর্তীকালীন এ রায় দিয়েছে এমন একটি সময়ে, যখন গোটা বিশ্ব দেখছে গাজা এবং পশ্চিম তীরের সমস্ত অঞ্চলে কীভাবে মার খাচ্ছে নিরপরাধ সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। কীভাবে অবিরাম এবং নির্বিচার আক্রমণে পর্যদুস্ত করা হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনপদ। ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনায়। হত্যা করা হচ্ছে মানুষের পর মানুষ। নিহত মানুষের সংখ্যা এরই মধ্যে ২৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, ইসরায়েলের বোমা হামলার বৈধ লক্ষ্য হয়ে গেছে নিরপরাধ ফিলিস্তিনিরা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের আক্রমণটি দুর্ঘটনা ছিল না। ১৯৪৭ সালে ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিন দখলের পর থেকে যে দুঃসহ যন্ত্রণা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও জিঘাংসার শিকার হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা, এটি ছিল মূলত সেই ক্ষোভ ও হতাশারই বহিঃপ্রকাশ। যদিও এমনটা হওয়া উচিত হয়নি, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা উচিত নয় কখনোই, তারা যে জাতিরই হোক না কেন। দুঃখজনকভাবে, এটা ঘটে গেছে। সবাই জানে হামাস এটা করেছে। প্রশ্ন হল, কেন এটা ঘটল এবং কারা ঘটতে দিলো? কেন হামাসকে এ ধরনের একটা আক্রমণে যেতে হলো?
স্পষ্টতই, ১৯৪৮ সালে, আরবদের লক্ষ্য করে কয়েক ডজন গণহত্যা চালানো হয়েছিল। সে সময় প্রায় ৪০০ আরব-সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর এবং গ্রামে অন্তত ৭ লাখ ৫০ হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকেই বিদেশি ইহুদিদের জন্য অবৈধ বসতি স্থাপন, বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলা এবং ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের পূর্বপুরুষদের আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদ এক স্বাভাবিক কাজ হয়ে উঠেছে।
শুধু গাজা নয় সমগ্র ফিলিস্তিনই ১৯৬৭ সাল থেকে সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সেখানকার মানুষ তাদের নিজেদের ভূমিতে উদ্বাস্তু হিসেবে বাস করে। শুধু ভূমি নয়, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী খাদ্য, জ্বালানি, পানি, বিদ্যুৎ এবং ওষুধ সরবরাহসহ গাজার অবরুদ্ধ জনগণের সমগ্র জীবনরেখা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ইসরায়েল দ্বারা নির্মিত কংক্রিটের দেয়ালের মধ্যে বাস করতে বাধ্য হয়। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর নিরাপত্তা চেকপোস্ট অতিক্রম না করে কোনো ফিলিস্তিনি বাইরে যেতে পারে না।
তাহলে, সবচেয়ে প্রশিক্ষিত-পরীক্ষিত এবং স্বনামধন্য ইসরায়েলি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সজাগ দৃষ্টি এড়িয়ে ৭ অক্টোবরের ঘটনা কীভাবে ঘটলো? এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে, তাদের এ আক্রমণ সম্পর্কে তারা কিছুই জানতো না। কে না জানে মোসাদের শক্তি ও সামর্থ্য সম্পর্কে। সব রকম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, গোপন অভিযান এবং সন্ত্রাস দমনের দায়িত্বে মোসাদ থাকার পরও গাজা থেকে এমন একটা আক্রমণ হতে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে তারা কিছুই জানতে পারেনি আগে থেকে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? নাকি এটা আদতে একটি বাহানা ইসরায়েলের? তারা কি গাজার সমস্ত জনগণকে নির্মূল করার একটা অজুহাত তৈরি করতে এটি ঘটিয়েছে? সম্ভবত সভ্য পৃথিবীর যৌক্তিক বোধসম্পন্ন প্রতিটি মানুষেরই আজ এই একই প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর দেবে কে?
আলজাজিরা জানিয়েছে, ICJ-এর বর্তমান সভাপতি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচারক জোয়ান ডোনাহু, ইসরায়েলের বিপক্ষে অস্থায়ী ব্যবস্থা ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন যে, আদালত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, গাজার "বিপর্যয়কর পরিস্থিতি" তার চূড়ান্ত রায় দেওয়ার সময় আরও খারাপ হতে পারে। তার মানে আন্তর্জাতিক আদালত ঠিকই আশঙ্কা করছেন গাজা পরিস্থিতির ভয়াবহতার চূড়ান্ত রূপ সম্পর্কে! ইসরায়েলি বর্বরতার বিষয়টা এখন তাদের কাছে পরিষ্কার।
পরিষ্কার হবে না-ই বা কেন, প্রতিদিন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) অবিরাম বোমা হামলার মাধ্যমে শত শত নিরীহ নিরস্ত্র বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। বাড়িঘর, স্থাপনা, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করছে। তারা যদি হামাসের সাথে যুদ্ধ করে, যেমনটা তারা দাবি করে, তাহলে কেন তারা হামাসমুক্ত পশ্চিম তীরে হামলা করছে? তারা ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। তারা ১২০ জনেরও বেশি সাংবাদিক, ৩০০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী এবং জাতিসংঘের জন্য কাজ করা ১৩৫ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে।
হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে গাজার অনেক অংশের প্রায় সব ভবনই সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল, স্কুল, সংবাদ সংস্থা, মিডিয়া আউটলেট, গির্জা, মসজিদ এবং আবাসিক স্থান। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা চলছে তো চলছেই, এটি থামার বা থামানোর কোনও লক্ষণ নেই।
গাজা ও পশ্চিম তীরের মানুষের মানবাধিকার আজ কোথায়? হাসপাতালের বিছানায় নারী-শিশু এমনকি অসুস্থ মানুষের সুরক্ষা কোথায়? হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে দোষারোপ করে নারী ও শিশুদের হত্যা করা আইডিএফের সুপরিচিত একটি পুরানো কৌশল। আদতে ইসরায়েলের কাছে যে কোনো গণহত্যার জন্যই পর্যাপ্ত অজুহাত রয়েছে।
সবাই জানে যে তারা সত্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য কতটা কুখ্যাত। যারা ইসরায়েলের সাথে একমত নয়, তাদের কাছে তারাই হামাসের সদস্য। যারা ইসরায়েলকে সমর্থন করে না, তাদেরকেই হামাসের সমর্থক মনে করে আইডিএফ। কী আশ্চর্য কথা! মাত্র ১ কোটিরও কম জনসংখ্যার এই দেশটির এই জঘন্য কর্মকাণ্ড বিশ্ব আর কতদিন দেখবে চেয়ে চেয়ে?
‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে’ এ কথা সত্য। তবে তারা কি এই আত্মরক্ষার নামে আদতে গণহত্যার এই সব কাজ করছে না? এই পুরানো, জং ধরা, এবং প্রতারণামূলক কথাবার্তাকে এখন আর কেউ বিশ্বাস করে না। প্রতিটি জাতি ও জনগণেরই ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ রয়েছে। পরিহাসের বিষয়, নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে অতিসচেতন ইসরাইল ফিলিস্তিনের জনগণের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ ধ্বংস করেছে এবং করছে।
ইসরাইল সব সময়ই শিকারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। মূলধারার মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করে তারা সফলভাবে ভুয়া খবর দিয়ে বিশ্বকে বোকা বানায়। কিন্তু সম্প্রতি অবস্থার বদল ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে ইসরায়েলের সমর্থক মিডিয়াগোষ্ঠী কিছু আর ঢেকে রাখতে পারছে না। সত্য ও মিথ্যার মুখোমুখি হওয়ার পর অনেক মানুষ এখন পক্ষ পরিবর্তন করছে, বিশেষ করে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং উত্তর আমেরিকায়।
পশ্চিমের অনেক মানুষ এখন বিশ্বাস করে যে, ইসরাইল দেয়ালের ভিতরে খাঁচায় বন্দী ফিলিস্তিনিদের হত্যা অব্যাহত রেখে হলোকাস্ট নিয়ে একটি রসিকতা করছে। তারা ভুলে গেছে ইউরোপের ৬০ লাখ ইহুদিকে আরবরা হত্যা করেনি, হত্যাকারী ছিল জার্মানরা। মজার বিষয় হলো, জার্মান চ্যান্সেলর ইসরায়েলের গণহত্যামূলক কাজকে সমর্থন করার জন্য ICJ-তে প্রতিষ্ঠিত সমন্ত তথ্য অস্বীকার করছেন। এভাবে কোনো বিবেকবান ও যুক্তিবাদী জাতি তাদের ভুক্তভোগীর অন্য অপরাধকে সমর্থন করে নিজেদের অপরাধের ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করবে না।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের স্থায়ী সমাধান, যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী সমাধানের দাবিতে নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের জন্য সারা বিশ্বের বৃহৎ এবং ছোট-বড় অনেক শহরে লক্ষাধিক মানুষ রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে বিভিন্ন সময়। যে নেতারা ইসরায়েলের সুবিধার জন্য স্থিতাবস্থাকে সমর্থন করেছিলেন এবং ৭ দশকেরও বেশি সময় ধরে সমস্যার সমাধান করেননি, তাদের ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের সাথে যা ঘটেছে তার দায় নেওয়ার সাহস থাকা উচিত। অসলো চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে দুটি কার্যকর ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তিতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া সময়ের দাবি। এতে যত বিলম্ব হবে, উভয় পক্ষের প্রাণহানি তত বাড়বে। উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতিসহ ট্র্যাজেডিকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
তবে আশার কথা হলো, বর্তমানে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এবং বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার ইহুদিও যুদ্ধবিরতির সমর্থনে এবং গাজা ও ফিলিস্তিনের অন্যান্য অংশে ইসরাইল কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। তাদের অনেকেই ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে ইসরায়েলের আগ্রাসন, বর্বরতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তারা। সহকর্মী খ্রিষ্টান এবং মুসলমানদের পাশাপাশি তারাও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তাদের মানবতার পক্ষে সচেতনতার আহ্বানে সাড়া দিতে উদ্বুদ্ধ করছে মানুষকে। জার্মান হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ছেলে বর্তমান প্রফেসর নরমাল ফিঙ্কেলস্টেইন, ইসরায়েলি বর্ণবাদ, নৃশংসতা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে ব্যাপকভাবে লিখেছেন। বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরি হচ্ছে ইসরায়েলের বিপক্ষে।
ফিলিস্তিনের জনগণের সাথে বর্ণবাদী ইহুদিবাদী রাষ্ট্র যেভাবে আচরণ করছে তা ভয়াবহ এবং অমানবিক। ইসরায়েলি কারাগারে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ভয়ানক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, এবং গাজার বাইরে যারা জিমি কার্টারের ভাষায় 'ওপেন এয়ার জেলে' বাস করছে। ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের নেতারা ফিলিস্তিনিদেরকে পশু, এমনকি পোকামাকড়ের চেয়েও নিকৃষ্ট মনে করে। ইসরায়েলের একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, মেনাচেম বেগিন বলেছেন যে, তার সরকার ফিলিস্তিনিদের অমানবিক করার জন্য অসাধারণ মাত্রায় চলে গেছে, নেসেটে এক বক্তৃতায় তাদেরকে 'দুই পায়ে হাঁটা পশু' হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ফিলিস্তিনিদের সাথে তারা যা করছে, তা যেন তাদের অধিকার! এর জন্য কোনো পরিণতি তাদের ভোগ করতে হয় না। করতে হয় না কোনো জবাবদিহিও কারো কাছে। এ পর্যন্ত ইসরায়েলের সব সরকারই একইরকম নিপীড়নমূলক আচরণ করে যাচ্ছে ফিলিস্তিনে। আর তাদের সুরক্ষায় কাজ করছে আমেরিকান অস্ত্র, অপরিসীম পৃষ্ঠপোষকতা ও পর্যাপ্ত তহবিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে উগ্রবাদ, চরমপন্থা এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ কার্যক্রমের মূল কারণ হিসেবে ইসরায়েলের চলমান এবং ক্রমবর্ধমান দখলদারিত্ব ও নিপীড়নকে দায়ী করা যায়। যে সমস্ত জনগণ, সরকার এবং প্রতিষ্ঠান গণহত্যা বন্ধ করতে চায় এবং এই অঞ্চলে শান্তি ও স¤প্রীতি বাড়াতে চায়, তাদের উচিত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টায় আন্তরিক হওয়া উচিত। যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি তাদের জন্য উপযুক্ত আশ্রয় ও নিরাপত্তা, জীবনের মৌলিক চাহিদা সরবরাহ নিশ্চিত করে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়াসহ সব ধরনের নৃশংসতা ও আক্রমণ থেকে বাঁচানোর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
শুধু ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়, সবার জন্য যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। এ যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধে ICJ-এর রায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দখলদারিত্ব ও বৈরিতার অবসানের একটি বড় সূচনা হতে পারে। আন্তর্জাতিক আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এ রায়কে সমর্থনকারী ICJ-এর বিচারকরা অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, ব্রাজিল এবং ভারত সহ সমস্ত শক্তিশালী দেশ থেকে এসেছেন। সেসব জাতিকে অবশ্যই আইনের শাসনের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে।
বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালত ও জাতিসংঘসহ এ ধরনের সংস্থাগুলোকে আরও বেশি করে মানবিক মর্যাদা ও নৈতিকতার জন্য প্রয়োজনীয় আস্থা, পবিত্রতা এবং মর্যাদা বজায় রেখে এগুলোকে সমুন্নত রাখতে ও বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে। একটি মানবিক পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। আধুনিক সভ্যতার অবস্থান দৃঢ় করতে হবে।
লেখক: উপাচার্য, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এবং ইমেরিটাস প্রফেসর, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া