০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:২৩

আত্মসম্মান সম্পন্ন শিক্ষাবিদ গুগল ট্র্যান্সলেটর দিয়ে পাঠ্যপুস্তক লিখে না

ড. সালেহ হাসান নকীব  © টিডিসি ফটো

বলতে ভালো লাগে না, কিন্তু তারপরও বলতে হয়। পাঠ্যবই প্রণয়নে দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অযোগ্য একদল মানুষকে কাজে লাগানো হয়েছে। এই সরকারের আমলে ন্যাশনাল কারিকুলামের বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যবই একটা বিতর্কিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই বিতর্কের দুটো দিক আছে। একটা হচ্ছে, দৃষ্টিভঙ্গি, রাজনীতি এবং জীবনবোধ সম্পর্কিত। অপর দিকটি হচ্ছে খাঁটি অযোগ্যতা নিয়ে। সিমপ্লি, জানে না, বোঝে না এমন একদল মানুষকে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের মত একটা গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর ফলাফল আমরা প্রতিদিন দেখছি।

আত্মসম্মান আছে এমন কোন শিক্ষাবিদ গুগল ট্র্যান্সলেটরের সাহায্য নিয়ে পাঠ্যপুস্তক রচনা করবে না। সম্পাদকের সামান্য দায়িত্বজ্ঞান থাকলে, ইংরেজি ফোর্স, বাংলা ‘ball’ হয়ে যেতে পারে না (ছবি দেখুন)।

ছবির শুরুতে আরো গুরুতর ভুল আছে। বলা হচ্ছে নিউট্রন ডিকেই করে ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রনে পরিণত হয়। একই কথা লেখা ছিল বাংলা  ভার্সানে। তখন আমার ধারণা হয়েছিল, নিউট্রিনো লিখতে বোধহয় নিউট্রন লিখে ফেলেছে। এখন বুঝতে পারছি, তা নয়। এমন একজন লিখেছে যার বেটা ডিকেই সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। থাকলে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভার্সানেই এই ভুল থাকত না।

আসলে নিউট্রিনো লিখলেও ভুল হত। ঠিক হচ্ছে, অ্যান্টি-নিউট্রিনো। নিউট্রিনো দিয়ে লেপ্টন নাম্বার কনজার্ভ করা যায় না। অ্যান্টি-পার্টিক্যালের প্রয়োজন হয়। তাই অ্যান্টি-নিউট্রিনো। একটা সেকশনের ইংরেজি হেডিং করা হয়েছে - Variation of Values in Basic Forces, কী আজব ইংরেজি! অ্যাসথেটিক সেন্স শূন্য! একটা সেন্টেইন্স মনে হল, আর লিখে দিলাম!     

ক্লান্ত লাগে। অপদার্থতার নতুন নতুন নমুনা প্রতিদিন দেখতে ভালো লাগে না। এদেশের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আর ভাবতে ইচ্ছে করে না।