বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত ও নিগৃহীত পেশার নাম শিক্ষকতা
জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক মো. নিজামুল করিম দাবি করেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত ও নিগৃহীত পেশার নাম স্কুল-কলেজের শিক্ষকতা।
গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি তার ফেসবুক আইডি থেকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই মতামত প্রকাশ করেন। শিক্ষকতা পেশা, পদোন্নতি নিয়ে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘শিক্ষকতা পেশা, পদোন্নতি ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা। বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত ও নিগৃহীত পেশার নাম স্কুল-কলেজের শিক্ষকতা। শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ নীতি নির্ধারণী সকল স্তরের কর্তাব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত শিক্ষকদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা নিয়ে নানান অসিহত করেন ও সুযোগ পেলেই পড়াশুনা করে না, মূর্খ, ফাঁকিবাজ, প্রাইভেট পড়ায় এসব নানান বিশেষণসহ অপমানিত করে গৌরব বোধ করেন। কেউ কেউ শ্লেষাত্মকভাবে বলেন, টিচার্স বাই চান্স নট বাই চয়েজ। চমৎকার লাগে শুনতে। একটি পেশা যখন মান-মর্যাদা ও সুবিধাদিতে আকর্ষণীয় হয় তখনই বাই চয়েজ সে পেশায় মেধাবীরা আসেন।
যদি প্রশ্ন করা হয় স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে শিক্ষা ও শিক্ষকতা পেশা আকর্ষণীয়করণে কী করেছেন তখন স্বর মিইয়ে যায় আর তখন শিক্ষকতাকে বলেন মানসম্মান আর অগুনতি সালাম আদাবের পেশা! আর কী চাই?
শিক্ষকদের এমপিও আর অবসরের পর বছর বছর ঘুরে প্রাপ্ত অবসর কল্যাণ ভাতা যেনো দান-খয়রাতের মতো। আর সরকারি শিক্ষকদের একই পদে যুগ পার করে দেওয়া হয় ড্রাই প্রমোশন। যে পদোন্নতির সাথে মর্যাদা ও সুবিধাদি থাকে না তাহাই কেতাবি ভাষায় Dry Promotion ।
শিক্ষকরা অন্তরে বৈষম্য আর বঞ্চনার কস্ট লুকিয়েও সমাজে মুখরক্ষার জন্য আনন্দ প্রকাশ আর একে অপরকে ফুলেল শুভেচছায় অভিষিক্ত করেন। অধ্যাপকগণ সহযোগী অধ্যাপকের ৪র্থ গ্রেডে পদোন্নতি পেয়ে শেষ ধাপে পৌঁছেছেন। মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রার অবমূল্যায়নের Time value of Money বিবেচনায় বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির যে নীতি পে-স্কেলের গ্যাঁড়াকলে তাও বন্ধ ৪/৫ বছর। প্রকৃত বেতন যে কমে গেছে তাতেও শিক্ষকদের কিছু যায় আসে না, লোকজন তো প্রফেসর সাহেব বলেন। তবুও পদোন্নতিপ্রাপ্ত অনুজ সহকর্মীদের অভিনন্দন ও শুভকামনা আর যাঁরা পদোন্নতি বঞ্চিত তাঁদের জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই দুই বছর ধরে শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি যোগ্য সাত হাজারের বেশি কর্মকর্তার পদোন্নতি আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষ সমিতি