ছাত্র রাজনীতি এবং চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির প্রাসঙ্গিকতা
বাধ্য হয়েই ভিন্ন মতের সহকর্মীদের সাথে কাজ করতে হয় বলে কষ্ট পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই বিসিএসে ছাত্রলীগের ছেলেদের অনেক দরকার। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপকমিটির পরিচিতি সভায় এমন মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, সচিবালয় এবং প্রশাসনে আমাদের আরো দক্ষ লোকের প্রয়োজন। তাই ছাত্রলীগের সুদিন ফিরিয়ে আনতে হবে। লেখাপড়ায় আরো মনোনিবেশ করতে হবে। ছাত্রলীগের ছেলেরা কেনো বিসিএসে আসেনা? কেনো লেখাপড়া করে না? প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই দুঃখ করে এ প্রশ্ন করেন বলেও জানান ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন গুলোর কর্মীরা শীর্ষ পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে আদিষ্ট করার লক্ষ্যে শিক্ষা জীবনের শুরুতে দলীয় সংগঠনগুলির সাথে জড়িয়ে পড়ে। পর্যায়ক্রমে নিজেকে ছাত্র রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েন।
আরও পড়ুনঃ কৃষি গুচ্ছে ৮৫ নম্বর পেয়েছেন তিনজন
উদাহরন স্বরুপ বলা যায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০ তম সম্মেলনে প্রায় ৪০০ কর্মী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করে। যাদের অধিকাংশের বয়স ৩০ অথবা এর কাছাকাছি। প্রায় ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থী সমর্থনকারী এই ছাত্র সংগঠনের বিভিন্ন জেলা, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ইউনিটের চিত্র প্রায় একই রকম।
এই শিক্ষার্থীদের বাস্তবধর্মী শিক্ষা লাভের সুযোগ না থাকায় পদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নেতাদের পেছনে ছুটেই পার করে জীবনের মূল্যবান সময়। পরবর্তীতে চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বয়স; আটকে যায় ৩০ এর শৃঙ্খলে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সরকারি এবং বেসরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থাকায় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর একটি বৃহৎ অংশ কাঙ্খিত পদ না পেয়ে ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়। ফলে পরিবার, সমাজ এমনকি দেশের বোঝা হিসেবে আবির্ভূত হয় এসব শিক্ষার্থী। ছাত্রসংগঠন করার কারনেই বেকার থাকতে হচ্ছে; এমন খোঁচা প্রতিনিয়তই পরিবার থেকে শুনতে হয়। ফলে ক্রমান্বয়ে প্রতিটি পরিবারের অপছন্দের বিষয় হয়ে দাড়াচ্ছে ছাত্ররাজনীতি।
এজন্য চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসারে ৩০ থেকে ৩৫ এ উন্নীত করলে শিক্ষার্থীরা নিজ যোগ্যতাবলে সরকারি-বেসরকারিসহ সব সেক্টরে প্রবেশ করে নিজের পরিবার ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে পারবে।
১৯৯১ সালে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে ৩০ বছর অর্থাৎ ৩ বছর বৃদ্ধি করা হয় । আমরা চাই, জনবান্ধব সরকার হিসেবে এবার আওয়ামী লীগ সরকার বয়সসীমা বৃদ্ধি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক।
আন্তর্জাতিক মানদন্ডে সামঞ্জস্য রেখে বয়সসীমা ৩৫ করে ছাত্রসমাজের বহুল আকাঙ্ক্ষিত এই দাবির পূর্ণতা দান করলে আরও বেশি জন সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি হবে এবং স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মানে শিক্ষার্থী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
লেখক: আহবায়ক, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ