মানুষ হতে হলে শক্ত হওয়া কি আসলেই জরুরি?
কোথাও শুনেছিলাম, your love language is something you didn't receive as a child. অর্থাৎ ছোটবেলা আপনি যা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন, ঠিক সেই আচরণ গুলোই আপনি আপনার পছন্দের মানুষ থেকে এক্সপেক্ট করেন। নিজেকে দিয়ে মিলিয়ে দেখলাম, আসলেই তাই।
যে ছোটবেলা পরিবারে অশান্তি দেখেছে, সে চায় একটা শান্ত প্রিয়জন। যে তার মনের অস্থিরতা দূর করবে। যে বাবা মা থেকে শুনেছে, ‘‘এটা পার না, ওটা পার না!’’ সে চায় তার প্রিয়জন তার ছোট বড় সব অর্জন নিয়ে হই হুল্লোড় করুক, বিশাল আয়োজন করুক।
যার সারাজীবন কেটেছে অন্যের সাথে তুলনা করে, সে চায় প্রিয়জন তাকে সবার তুলনায় ভালো, সবার তুলনায় সুন্দর- এ জাতীয় প্রশংসা করুক। যে ছোটবেলা নিজের ইমোশনালি আনস্টাবল পিতামাতার রাগ, অত্যাচার সামলেছে, সে আশা করে তার রাগ, কষ্ট কেও বুঝুক, দেখুক।
আরও পড়ুন: পরাজয়-ব্যর্থতায় হতাশ হওয়া যাবে না: ঢাবি ভিসি
মলেস্টেড হওয়া ছোট শিশু বড় হয়ে একটা ছায়া চায় যে তাকে আগলে রাখবে এই নোংরা পৃথিবী থেকে। ছোট থেকেই পরিবারের দায়িত্ব নেয়া ‘তুমি তো বেশ দায়িত্বশীল/ ম্যাচুর্ড’ শোনা মানুষটা চায় এমন কাউকে যার কাছে একটু নেকামো করা যায়, যার সামনে শক্ত খোলসটা খুলে ফেলা যায়।
অতিরিক্ত আদরে থাকা ‘ফার্মের মুরগী’ ডাক শোনা মানুষটা কারো উপর একটু ভাব খাটিয়ে একটা হর্তা-কর্তা সুলভ আচরণ করতে চায়।
এইযে ছোটবেলার ট্রমাগুলা আমাদের বড়বেলাকে এত গভীরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, এটা কেমন একটা অবিচার না? নিজের উপর তো বটেই, নিজের প্রিয়জনের উপরও।
আর আমরা তাও বলি, মানসিক স্বাস্থ্য একটা মিথ। এটা নিয়ে এত মাতামাতি করার কিছুই নেই। সবাই কষ্ট পায়, তুমিও পাও। নাহলে শক্ত হবে না, নাহলে মানুষ হবে না। মানুষ হতে হলে শক্ত হওয়া কি আসলেই জরুরি?
লেখক: চিকিৎসক, ইপসম এন্ড সেন্ট হেলিয়ার হাসপাতাল