ফারদিন নয়, ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরেছে তার ফোন
এভাবে ভাবুন। প্রথম মিনিটেই ফারদিনের ফোনটি কেড়ে নেওয়া হয়। পেশাদার অপরাধীদের একজন ফোন পকেটে পুরে মোটরবাইকে দ্রুতগতিতে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরেছে। উদ্দেশ্য জিপিএস লোকেশন ডেটা তৈরি করে দুনিয়াকে বিভ্রান্ত করা। (অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও চতুরতাপূর্ণ কাজ। হতে পারে অপরাধী ফারদিনের জামাকাপড়ও পরে নিয়েছিল সিসি ক্যামেরায় যাতে ফারদিনই চিহ্নিত হয়।)
তার ঘোরাঘুরির সময়ে অপরাধী দলের অন্য সঙ্গীরা নির্যাতন ও হত্যকান্ডের কাজটি সেরে নিয়েছে। লাশ নদীতে ফেলার ঠিক আগেআগে পকেটে ফোনটি রেখে দিয়েছে। ঘড়ি-টাকাপয়সা সবকিছু ঠিকঠাক রেখে দিয়েছে, ফের জামাকাপড়ও পরিয়ে দিয়েছে যাতে প্রমাণ করা যায় ফারদিন নিজেই… (অত্যন্ত অত্যন্ত অত্যন্ত সুপরিকল্পিত কাজ!)
আরও পড়ুন: বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন: ডিবি
বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান পড়েছি। পড়িয়েছি টানা কয়েক বছর। এটুকু বুঝার কমন্সেন্সটি নিশ্চয়ই হয়েছে- পুলিশের প্রশিক্ষিত গোয়েন্দাদের এই বাস্তবতাটি ধরে না এগোনোর কোনোই কারণ থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন: ফারদিনের মৃত্যু: হত্যা থেকে আত্মহত্যা
তবুও তাঁরা কেন জিপিএস-এর লোকেশন ডেটাই সর্বশক্তিমান প্রমাণ- এমন ধারণা দিয়ে চলেছেন? কেনই বা তদন্তে প্রাপ্ত ভিন্নভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, ঘটনাপঞ্জির বয়ান দিয়ে চলেছেন? কেনইবা মাদকসন্ত্রাসীটিকে খুন করা হলো? কেনইবা একই রাতে অনেকটা ফারদিনের মতই বিপ্লবকেও মরতে হল?
শুধুমাত্র ফারদিনের বাবা-মা বা পরিবার-স্বজনদের জন্যই নয়, দেশের নিরাপত্তাহীন প্রতিটি সাধারণ মানুষের জন্যই এই পুলিশি অগ্রগতি সুপার ডিস্টার্বিং। রীতিমত আতংকে রক্ত হিম করে দেবার মত।
ধরে নিলাম পুলিশ এই সম্ভাবনাটি ধরে এগোয়নি। এখন তো নিশ্চয়ই এগোতে পারে। নাকি এই সম্ভাবনা ধরেও এগিয়েছিল? তাহলে এই সম্ভাবনা ধরে এগোনোর ফলাফলটি জানতে চাই। নাকি পুলিশ জানিয়েছে, আমরা অনেকে খেয়াল করিনি? সেক্ষেত্রে আবার বলার অনুরোধ থাকল। দেশের নিরাপত্তাহীন প্রতিটি সাধারণ মানুষের মনে নিরাপত্তা বিষয়ে ন্যুনতম আস্থাটুকু তো ফিরুক। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]
লেখক: অধ্যাপক, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়