বালতি ও বোতল হাতে সড়ক অবরোধ ওসমানী মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের
আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে খাবার ও নিত্য ব্যবহারের পানির দাবিতে বালতি ও বোতল হাতে সড়ক অবরোধ করেছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত পানির দাবিতে মেডিকেল কলেজের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ আবাসিক হলের সামনে রিকাবীবাজার-চৌহাট্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তিন দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ করে রাখার প্রতিবাদ জানান।
অবরোধের কারণে ইফতারের আগে সড়কটিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সিলেট কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ। পরে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ শিক্ষকেরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আটটি আবাসিক হলে দীর্ঘদিন ধরে পানির সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা সেটির দিকে নজর দেয়নি। হলগুলোতে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র দুই থেকে তিন ঘণ্টা পানি থাকে। বাকি সময়ে হলে পানি থাকে না। এতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রমজান মাসে সাহ্রি ও ইফতারের সময় পানি থাকে না। এ ছাড়া প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সুপেয় পানির সরবরাহ করা হচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের বাইরে থেকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হচ্ছে। এ ছাড়া ব্যবহারের জন্য হলসংলগ্ন এলাকার কোয়ার্টার থেকে শিক্ষার্থীদের পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আবাসিক হলের ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত পানি পান না। পানির দাবিতেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল হাসান বলেন, কলেজের আটটি হলের কোনোটিতেই নিয়মিত পানি সরবরাহ করা হয় না। দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের এমন দুর্ভোগের শিকার হতে হবে, এটি কোনো সময়ই কাম্য নয়। বিষয়টি একাধিকবার কলেজের শিক্ষক এবং হল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও সমস্যার সমাধান করা হয়নি।
এ বিষয়ে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. ময়নুল হক বলেন, তিনদিন ধরে হলে পানি সরবরাহ করা পাম্পটি বিকল। ওই পাম্পটি সিলেট গণপূর্ত অধিদপ্তরের। আমরা বিষয়টি লিখিতভাবে তাদের অবহিত করে দ্রুত পানির সমস্যা সমাধানের জন্য বলেছি।
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. ময়নুল হক আরও বলেন, হলে ব্যবহারের পানি রয়েছে, তবে খাওয়ার পানির সংকট রয়েছে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগও হয়েছে। তারা বলেছে শনিবারের মধ্যে পানির সমস্যার সমাধান করা হবে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে হলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। হলের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সিলেট গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়ের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।