যৌন হয়রানির অভিযোগে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে করে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন ৯ শতাধিক রোগী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঘটনা নিরসনে অভিযুক্ত গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া ডা. মাহফুজুর রহমানকে মারধর করায় ৬ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা কাটানোর মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে নিয়ম অনুযায়ী ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটি অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুনঃ ভিডিও গেম খেলতে না দেওয়ায় ৮ বছরের শিশুর আত্মহত্যা
কক্সবাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মীর ম.ম. বিল্লাহ তকী জানান, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর যৌন হয়রানিসহ অশালীন আচরণে তত্ত্বাবধায়ক বরাবরে অভিযোগ করেন ৬ নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক। ওই অভিযোগের ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের বেতন ভাতা কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন একটি পত্র ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ শাখার সদস্যরা। ফলে সকাল থেকে কোন ওয়ার্ডে ইন্টার্নরা তাদের কাজে যোগ দেয়নি। তবে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল।
তিনি জানান, ৬ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জারিকৃত আদেশ প্রত্যাহার ও অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এ কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুমিনুর রহমান জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কিছুদিন ধরে উচ্ছৃংখল আচরণ করছে। কিছুদিন আগে এক আইনজীবীকে রাস্তায় মারধর করেন ইন্টার্ন ছেলেরা। এ নিয়ে কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সভাপতি সহ এক সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সম্প্রতি হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানকে রাতে রুমের দরজা বন্ধ করে পেটানো হয়। এ নিয়ে ডা. মাহফুজুর রহমান ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গেলে আমি নিষেধ করি এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি। পরে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন বন্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত হয়। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে যৌন হয়রানি ও অশালীন অভিযোগে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরে জানানো হলে কর্তৃপক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমানকে সরিয়ে নেন এবং অন্যত্রে বদলি করেন। তবে হাসপাতালের চলমান কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। শুক্রবার থেকে নিয়ম অনুযায়ী তাদের হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটি অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।