মেডিকেল ছাত্রীকে ছাত্রলীগ নেতার কু-প্রস্তাব; ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকি
নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুর রহমান সোহাগের (২৭) বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের এমবিবিএস পড়ুয়া ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব এবং তাতে রাজি না হওয়ায় হুমকির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন।
জানা যায়, বিবাহিত পরিচয় দেয়ার পরও কু-প্রস্তাব দেওয়া থেকে সরে আসেননি ওই ছাত্রলীগ নেতা। এ বিষয়ে রাজধানীর ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তে রয়েছে বলে জানায় থানা কর্তৃপক্ষ।
মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, বিবাদী নাহিদুর রহমান সোহাগ, (২৭) পিতা- অজ্ঞাত, মাতা- অজ্ঞাত, থানা- নড়িয়া, জেলা- শরীয়তপুর এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিতিছে যে, উক্ত বিবাদী ধানমন্ডি মডেল থানাধীন রোড নং-৮/এ, নদার্ন মেডিকেল হাসপাতাল এর এমবিবিএস ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। তার ব্যাচ এনআইএমসি-৯ রোল নং-(৩৫), এ/পি- হাজী আফসার উদ্দীন রোড, পশ্চিম ধানমণ্ডি, বাসা অজ্ঞাত, থানা- হাজারীবাগ, ডিএমপি ঢাকা। উক্ত বিবাদী ও আমি একই মেডিকেল কলেজে (এমবিবিএস) পড়াশুনা করি। বিবাদী আমার দুই ব্যাচ সিনিয়র। একই সাথে পড়াশুনা করার সুবাদে দেখা-সাক্ষাৎ ও পরিচয় হয়।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে দুপুর ১টার দিকে নাহিদুর রহমান সোহাগ আমার সাথে কথা বলার সুযোগ নেয় ও সম্পর্ক করাসহ কু-প্রস্তাব দেয়। আমি তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেবে বলে এবং আমাকে বলে, ‘তোর স্বামীর সংসার ভেঙ্গে দেব।’ আরও বিবিধ বিষয় নিয়ে সে আমাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে। আমি বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বিবাদী নিজে কলেজ ক্যাম্পাসের লাইব্রেরীতে আমার সাথে দেখা হইলে আমি যেন তার কু- প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। এ বিষয়ে সে জোরপূর্বক প্ররোচিত করছে। আমি কোন উপায় না দেখে বিষয়টি আমার পরিবার এবং সহপাঠিদের জানাই। আমার পরিবার কলেজের প্রিন্সিপালকে বিষয়টি জানায়। কর্তৃপক্ষকে জানানোর ঘটনাটি বিবাদী জেনে ফেলায় আমি প্রাণনাশের ভয় পাচ্ছি। পাশাপাশি আরও শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের আশংকা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য নাহিদুর রহমান সোহাগকে ফোন দেওয়া হলে তার ব্যবহৃত তিনটি নাম্বার-ই বন্ধ পাওয়া যায়।
ধানমন্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মামলাটি গ্রহণ করেছি। বর্তমানে সেটি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সার্বিক যাচাই-বাছাই করছি। আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে সম্মিলিত বেসরকারি চিকিৎসা বিজ্ঞান ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. মিজানুর রহমান সুমনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমার কাছে বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। তবে বিষয়টি আমি শুনেছি।’
সাংগাঠনিক কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে সুমন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি তদন্তে প্রমাণ হলে তাহলে আমরা কেন্দ্রীয় সংগঠনকে অবহিত করব। কেন্দ্রীয় সংগঠন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’