পোস্টগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, ঢামেকের সহযোগী অধ্যাপককে বদলি
নারী রেসিডেন্ট চিকিৎসকের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল আলমকে দিনাজপুরে বদলি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব সনজীদা শরমিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলি আদেশ দেওয়া হয়। এর আগে ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের এক জরুরি সভায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম খানকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (জেনারেল/ক্লিনিকাল নিউরোসার্জারি পদের বিপরীতে) পদে বদলি করা হল। তিনি বদলির আদেশ জারির তিন কর্মদিবসের মধ্যে বদলিকৃত/পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় পরবর্তী কর্ম দিবসে অবমুক্ত হবেন।
জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের ফেজ-এ রেসিডেন্ট ডা. নুসরাত নওশিন নওরিন গত ১ নভেম্বর নিউরোসার্জারি বিভাগের হোয়াইট ইউনিটে যোগদান করেন। পরে তিনি ইউনিট প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম খানের সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও অপমানজনক মন্তব্য করেন ডা. খান। ঘটনার পরদিন সোমবার সকালে অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা একযোগে প্রতিবাদ করেন। ওই সময় দেড় ঘণ্টা রুটিন অপারেশন বন্ধ রাখেন তারা।
ডা. নুসরাত নওশিনের অভিযোগ, ডা. শামসুল ইসলাম খান অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের ‘কুকুরের জাত’ বলে সম্বোধন করেন। এ ছাড়া নির্দিষ্ট চিকিৎসকদের নাম উল্লেখ করে গালিগালাজ করেন তিনি। এমনকি সহকর্মী চিকিৎসক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়েও অশোভন মন্তব্য করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার দুপুরে নিউরোসার্জারি বিভাগের জরুরি সভায় অভিযুক্ত চিকিৎসককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে তিন সদস্যের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটিও গঠন করা হয়। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী রেসিডেন্ট চিকিৎসককে অন্য ইউনিটে পদায়ন করা হয়।
পরে নিউরোসার্জারি বিভাগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিউরোসার্জারি বিভাগ ঢামেক হাসপাতালকে স্পষ্টভাবে জানাতে চায় যে, উত্থাপিত অভিযোগে বর্ণিত উক্তিসমূহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত চিন্তাপ্রসূত, যা নিউরোসার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিউরোসার্জারি বিভাগ গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে। নিউরোসার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ পেশাগত নৈতিকতা, সহকর্মীদের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং রোগী সেবার উচ্চতম মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
প্রসঙ্গত, রেসিডেন্ট বলতে মেডিকেলে স্নাতকোত্তর (পোস্টগ্র্যাজুয়েট) পর্যায়ে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণরত চিকিৎসককে বোঝায়। রেসিডেন্ট চিকিৎসক হাসপাতালে থেকেই প্রশিক্ষণগ্রহণ করেন। এ সময় সিনিয়র চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেন তারা।