দুই বছরেই রামেবি ভিসির ঘাড়ে অভিযোগের পাহাড়
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিবের বিরুদ্ধে মাত্র দু’বছরেই জমেছে অভিযোগের পাহাড়। নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা, জামায়াত-বিএনপি তোষণ, রাজশাহীতে অফিস না করে রোগী দেখার জন্য ঢাকায় অবস্থানসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সূত্রের বরাত জানা যায়, রামেবির ৯টি অনুষদের ডিনের মধ্যে ৩টিতেই জামায়াতের অনুসারী বলে পরিচিত অধ্যাপক ডা. জাওয়াদুল হককে এবং ২টিতে ড্যাবের সাবেক নেতা অধ্যাপক ডা. এসএম আসাফদ্দৌলাকে নিয়োগ দিয়েছেন ভিসি। সংগঠন দু’টির নেতারা অভিযোগ করেছেন যে ডিন পদে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা পছন্দ নয় ভিসির।
স্বাচিপ রাজশাহী জেলার সভাপতি অধ্যাপক ডা. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, ভিসির কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থি এবং চিকিত্সক সমাজের স্বার্থবিরোধী।
রামেবি ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যখন-যাকে খুশি নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউজিসি এডহক ও মাস্টাররোলে নিয়োগ বন্ধের নির্দেশনা দিলেও গত একবছরে ১০ দফায় অন্তত ৩০ জনকে এডহক নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। এছাড়া জানা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগে দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের গুরুতর অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সিন্ডিকেট সদস্যদের কাছে গত ফেব্রুয়ারিতে কে-বা কারা চিঠি পাঠিয়েছে।
জানা যায়, অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিব ভিসি পদে যোগদানের পর থেকেই রাজশাহীতে অফিস করেন না। তিনি ঢাকার মিরপুর-১০ এলাকায় চৌরঙ্গী চশমা ঘরে নিয়মিত রোগী দেখেন। সংশ্লিষ্ট বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি মাঝে মধ্যে রাজশাহীতে আসেন। গত ৮ মাসে তিনি রাজশাহীতে অবস্থান করেছেন মাত্র ২৬ দিন।
এ প্রসঙ্গে স্বাচিপের রামেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান বলেন, রামেবি ভিসিকে মাঝে মধ্যে রাজশাহীর কিছু প্রোগ্রামে দেখা যায়। তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় করেন না, সবসময় জামায়াত-বিএনপিপন্থীদের নিয়ে চলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে রামেবি উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাসুম হাবিব পাঁচটি ডিন পদে দু’জনকে নিয়োগের সত্যতা স্বীকার করলেও এডহক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের চিঠিকে বেনামী বলে দাবি করেছেন। রাজশাহীতে না যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজালের (ডিপিপি) কাজের জন্য তিনি ও পরিচালক অর্থসহ কয়েকজন ঢাকা অফিসে কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, স্বাচিপ ও বি এম এ নেতাদের মাধ্যমে রামেবি ভিসির ব্যাপারে আমি অবগত হয়েছি। বিষয়টি আমরা দেখছি।