ময়মনসিংহ মেডিকেল ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকসহ ৮ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের নির্যাতনসহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ৮ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার করেছে কলেজ প্রশাসন। রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজীবন বহিষ্কৃতদের মধ্যে আছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি অনুপম সাহা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান। অন্য ৬ শিক্ষার্থী হলেন মাশফিক আনোয়ার, অনুপম দত্ত, সঞ্জীব সরকার, সাইফুল ইসলাম, মাহিদুল হক ও জাহিদুল ইসলাম।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল আলম খান জানিয়েছেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা অপরাধ করেছে, তারাই শাস্তি পেয়েছে।’
সব মিলিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ প্রশাসন। এদের মধ্যে ৮ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে (বর্তমানে চিকিৎসক) ৫ অক্টোবর থেকে আজীবন কলেজ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে প্রবেশ, অবস্থান ও কোনো প্রকার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১১ জনকে
অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত এবং চারজনের হোস্টেলে প্রবেশ আজীবন নিষিদ্ধ করেছে। মুচলেকা দিয়ে পাঁচ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস, হোস্টেলে অবস্থান, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছেন।
১১ শিক্ষার্থীকে সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের জন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা হলেন ম-৫৭ ব্যাচের রকিবুল হাসান ও আলমগীর হোসেন; ম-৫৩ ব্যাচের মেহেদী হাসান; বিডিএস-১০ ব্যাচের মেরাজ হোসেন; বিডিএস-৭ ব্যাচের সানজিদ আহমেদ ও মুনতাসির রাতুল; বিডিএস-৮ ব্যাচের শাহরিয়ার ইফতেখার; ম-৫৮ ব্যাচের রাইয়ান হাবিব, অর্ণব সাহা ও শামস আরেফিন এবং বিডিএস-১০ ব্যাচের আসিফ ইকবাল। এর মধ্যে প্রথম নয়জনকে হোস্টেলে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চারজনকে হোস্টেলে প্রবেশ আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা হলেন বিডিএস-৮ ব্যাচের আশিক মাহমুদ, ম-৫৬ ব্যাচের মঞ্জুরুল হক, ম-৫৭ ব্যাচের আশিক উদ্দিন ও ম-৫৯ ব্যাচের কুবের চক্রবর্তী।
গত ৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে এই ২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সভা শেষে চিঠি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছিল, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত সাময়িকভাবে তাদের ২৮ জনকে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হলো। এ ছাড়া তাদের ক্যাম্পাস ও হোস্টেল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী গতকাল শিক্ষার্থীরদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিল কলেজ প্রশাসন।