শাস্তি পেলেন ফরিদপুর মেডিকেল ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৮ জন
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির দেওয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগের পর তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল। বুধবার (২ অক্টোবর) কলেজের সম্মেলনকক্ষে সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দিলরুবা জেবা গণমাধ্যমকে বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশ পর্যালোচনা করা হয়। পরে কাউন্সিল সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৪ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় কলেজে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ঐষিকা ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান জীমকে ক্যাম্পাসে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সনদ স্থগিতসহ মামলার সুপারিশ করা হয়। তারা দুজনই ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। অন্য ১৬ জনের ইন্টার্নশিপ সনদ স্থগিত, বহিষ্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২৬ ব্যাচের নুজহাত তাবাসসুমকে ক্যাম্পাসে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৭তম ব্যাচের নাইম আল ফুয়াদ খানের ইন্টার্নশিপ পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত, আজীবন ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত, ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার ও মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। একই ব্যাচের সৌরভ পাল ও ইমরান হোসেনের ইন্টার্নশিপ পাঁচ বছরে জন্য স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
২৭তম ব্যাচের আশরাফুল কবিরের ইন্টার্নশিপ চার বছরের জন্য স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তিন বছরের জন্য ইন্টার্নশিপ স্থগিত ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে ২৭তম ব্যাচের আল নাহিয়ান খানকে। ২৮তম ব্যাচের আজিজুল হক প্রান্ত এবং ২৯তম ব্যাচের সাদমান ও ইফতেখার আহমেদকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে দুই বছর ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
২৭তম ব্যাচের অনুজ বিশ্বাসকে এক বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার, ২৯তম ব্যাচের মুসুক উল্লাহ, ৩০তম ব্যাচের আকিফুর ফারহান, প্রান্তিক চন্দ্র মোহন্ত, শামীম রেজা, তাজবিন আহমেদ ও মাহমুদুল হাসানকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ছয় মাস ও ছাত্রাবাস থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
আরো পড়ুন: রাজশাহী মেডিকেলের ২০ শিক্ষার্থী ও ১২ শিক্ষকের শাস্তি
শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের কাছে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ করেছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ফারুক আহমেদকে আহবায়ক করে ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাশতুরা মোশাররফ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসানের বক্তব্য জানা যায়নি। কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, শাস্তি পাওয়া সবাই ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেতা-কর্মী।