রাজশাহী মেডিকেলের ২০ শিক্ষার্থী ও ১২ শিক্ষকের শাস্তি
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ২০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার দায়ে শাস্তি পাচ্ছিনে ১২ শিক্ষক। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রামেকের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পর তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০ শিক্ষার্থীরা বিরুদ্ধে কঙ্কাল ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অস্ত্র বহন, মাদক সেবন, হোস্টেলের সিট দখল, র্যাগিং, ইন্টার্নদের নির্যাতন, নারী হোস্টেলে প্রবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে বক্তব্যসহ হুমকি ও নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আর শাস্তি পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জনকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য ছয়জনকে বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হবে।
রামেক সূত্র জানায়, শাস্তি পাওয়া ২০ শিক্ষার্থীর সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। এর মধ্যে এমবিবিএস ৬১তম ব্যাচের সজিব আকন্দকে তিরস্কার এবং অভিভাবকের উপস্থিতিতে মুচলেকা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি ১৯ জনকে হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ছয়মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হবে।
এক বছরের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ৬১তম ব্যাচের বখতিয়ার রহমান, আরাফাত জুলফিকার ডেভিড, ফারিয়া রেজোয়ানা নিধি, নকিবুল ইসলাম শাকিল, নাফিউ ইসলাম সেতু এবং ৬৩তম ব্যাচের শেখ সাকিব ও সোহম বিজয়।
ছয় মাসের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ৬১তম ব্যাচের রাশিদ মোবারক, ৬২তম ব্যাচের হাসিবুল হাসান শান্ত, রাশেদুল ইসলাম, শোয়েব আকতার শোভন, আশিকুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, জুহাইর আঞ্জুম অর্ণব, মাহফুজুর রহমান, ৬৩তম ব্যাচের কাজী হানিফ ও পূর্ণেন্দু বিশ্বাস, ৩১তম বিডিএস ব্যাচের নূর এ জান্নাত এবং ৩৩তম বিডিএস ব্যাচের ফারদিন মুনতাসির।
আরো পড়ুন: আন্দোলনের সময় ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩
রামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খন্দকার ফয়সল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ৩৪ শিক্ষক ও ৪৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, যারা অভিযোগ তুলেছেন এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সবাই এ মেডিকেলের শিক্ষার্থী। তাই নির্মোহভাবে তদন্ত করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি। সুপারিশ একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তোলা হলে সর্বসম্মতিক্রমে শাস্তির ব্যাপারে একমত হন সবাই।