একজনকে গুলি করার পর ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান বাকি শিক্ষার্থীরা
ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ৯৯৯ ফোন দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার পর শিক্ষক রায়হান শরীফ অস্ত্র উঁচিয়ে বাকিদের বলেন, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব।
শিক্ষকের গুলিতে আহত আরাফাত আমিন তমালের বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন মামলার অভিযোগপত্রে একথা উল্লেখ করেছেন। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষক রায়হান শরীফ সব সময় অস্ত্র নিয়ে ক্লাসে আসতেন। টেবিলে অস্ত্র রেখে লেকচার দিতেন। শিক্ষার্থীদের ভয় দেখাতেন। শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন। তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হতেন এবং শিক্ষার্থীদের অহেতুক বকাবকি করতেন। বকাবকির একপর্যায়ে রায়হান শরীফ ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন।
গুলিতে তমালের ডান পায়ের ঊরুর ওপরের অংশে গুরুতর জখম করে পঙ্গু করে। গুলি করার পর শিক্ষক রায়হান শরীফ অস্ত্র উচিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, তোরা যদি ওকে (তমালকে) চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিতে ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রায়হান শরীফকে আটক করে। এ সময় তার ব্যবহৃত অস্ত্র জব্দ করে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
তমালের বাবা আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেলতে গুলি করা হয়েছে। তাকে গুলি করার পর তার বন্ধু আকতারুজ্জামন মোবাইল ফোনে আমাকে জানায় তমালকে গুলি করা হয়েছে। তাকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে আমি কলেজে ছুটে আসি। আমি এঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
এদিকে ডা. রায়হান শরীফ ফৌজদারি অপরাধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের পার্সোনেল-১ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এদিকে, অপরদিকে আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার প্রতিবাদ বুধবারও ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে কালো ব্যাচ ধারণ করে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ শ্রেণিকক্ষের ভেতরেই কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন। এরপর রায়হান শরীফকে ঘরে আটকে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়।