ধ্বংসের মুখে গণস্বাস্থ্য মেডিকেলের ১১০ শিক্ষার্থীর জীবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও সমাজ ভিত্তিক গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের মধ্যকার ঝামেলায় শিক্ষা জীবন ধ্বংসের হুমকিতে মেডিকেলটির ১১০ শিক্ষার্থীর। সকল নিয়ম মেনে মেডিকেলে ভর্তি হলেও প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় বসতে পারছেন না তারা। এ অবস্থায় প্রফেশনাল পরীক্ষার নিবন্ধন ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার (৩১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজ ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবকরা বলেন, এখানে আমরা ১১০টি পরিবার। আমাদের ১১০ জন সন্তানের সমাজভিত্তিক গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সরকার ঘোষিত যোগ্যতার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। তারা সকল যোগ্যতার মাপকাঠি অনুসরণ করে এই বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে।
তারা বলেন, আগামী ২ নভেম্বর থেকে তৃতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। কিন্তু এই শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মানুযায়ী নিবন্ধন করে ফরম ফিলাপের ব্যবস্থা করার কথা। কিন্তু মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রশাসনিক জটিলতার কারণে এটি সম্ভব হয়নি।
‘‘আমরা আমাদের সন্তানদের সকল নিয়মকানুন মেনে এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে ২০২১-২২ শিক্ষা বর্ষে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বিগত আগস্ট ২০২৩ আমরা সন্তানদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, তারা রেজিস্ট্রেশন জটিলতার কারণে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’’
অভিভাবকরা বলেন, যদিও কলেজের অভ্যন্তরীণ সকল পরীক্ষায় তারা মেধা ও যোগ্যতার প্রমাণ করেছে। গত আগস্ট মাসে আমরা জানতে পারলাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে অন্তর্নিহিত কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমবনকি বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।
মেডিকেল কলেজের অনিয়মের কথা জানিয়ে তারা বলেন, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে মাত্র ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মেডিকেল কলেজ হাইকোর্টে এক রিটপিটিশন দাখিল করে আরও ৫০ জন অতিরিক্ত ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি জন্য আদেশ পায় এবং সর্বমোট ১১০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করে। ভর্তির চার মাস পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেন। ফলে রিটপিটিশনের আদেশ স্থগিত হয়ে যায়। যা এখন আপিলেট ডিভিশনে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরণের বিকল্প পথ নেই। আমাদের ১১০ জন সন্তানের শিক্ষা জীবনের চরম দুরাবস্থা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরে এ সমস্যা সমাধানের জন্য সহযোগিতা করুন। আমরা প্রধানমন্ত্রী সু-দৃষ্টি আশা করছি। আমরা আমাদের স্থায়ী সম্পদ, অর্থাৎ জমিজমা বিক্রি করে সন্তানদের চিকিৎসক বানানোর লক্ষ্যে গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছিলাম। ভর্তির জটিলতা সম্পর্কে আমরা অবগত ছিলাম না।