১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪৬

চমেকের ৪ ছাত্রকে রাতভর পেটালেন ছাত্রলীগ কর্মীরা

অভিযুক্তরা ইব্রাহিম সাকিব, অভিজিৎ দাশ, রিয়াজুল জয়, জাকির হোসেন সায়াল, জুলফিকার মোহাম্মদ শোয়েব ও মাহিন আহমেদ  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে চার শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসে গত বুধবার দিবাগত রাত ২টায় এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার চার শিক্ষার্থী হলেন- মেডিকেল কলেজের ৬২তম ব্যাচের এম এ রায়হান, মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল এবং সাকিব হোসেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ইব্রাহিম সাকিব, অভিজিৎ দাশ, রিয়াজুল জয়, জাকির হোসেন সায়াল, জুলফিকার মোহাম্মদ শোয়েব ও মাহিন আহমেদ। চমেকের একাধিক সূত্র দাবি করেছে অভিযুক্তরা সকলেই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং ইতোপূর্বে তারা একটি মারামারির ঘটনায় কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান,  রাজনীতিতে যুক্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে হাসাহাসি করায় ঘটনার সূত্রপাত হয়। এর জেরে বুধবার রাত দেড়টার দিকে ৬২তম ব্যাচের চার শিক্ষার্থী এম এ রায়হান, মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র, জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে রিয়াজুল ইসলাম জয়ের 17A রুমে নিয়ে যায়। ওই রুমে সকাল পর্যন্ত তাদের নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাদের ভর্তি  নেয়নি, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হলে ফেরত পাঠানো হয়।

ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের  চুপ থাকতে হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে হলে পুলিশ আসে। সাকিব এবং ওয়াকিলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পুলিশ ও কলেজ প্রশাসন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্তমানে তারা চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইব্রাহিম সাকিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার এক বন্ধু বাথরুমে পড়ে গিয়েছিল আমি শুধু তাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। কেনো নির্যাতনের অভিযোগ আনা হচ্ছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’

অপর অভিযুক্ত মাহিন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া, জয়, সায়াল এবং অভিজিৎয়ের সাথে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, নির্যাতনের বিষয়টি আপনারা যেমন শুনেছেন আমিও তেমন শুনেছি। তবে যেসকল শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তারা এমন কিছু বলছেন না। তারা বলছেন বাথরুমে পড়ে গিয়েছেন। এরপরও বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে তোলা হবে এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমরা ছাত্রাবাসে নিয়মিত পুলিশের সাথে আরও পুলিশ মোতায়েন রেখেছি। নির্যাতনকারীদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি।