অধ্যক্ষের চাকরিচ্যুতসহ ৫ দফা দাবি আলিয়ার প্রাক্তন ছাত্রদের
রাজধানীর বকসীবাজারে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার হল সুপারের বাসভবন ভেঙ্গে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাদ্রাসার সুরক্ষা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুছ ছবুর মাতুব্বর।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করার আগে আলিয়া মাদ্রাসা সুরক্ষা পরিষদ গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে আবদুছ ছবুর মাতব্বকে আহ্বায়ক ও মুনুরুল ইসলাম আকাশকে সদস্য সচিব করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে আব্দুছ ছবুর মাতুব্বর ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে আলিয়া মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের আর্থিক দুর্নীতি বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠ অনুসন্ধান করে বিচারের কাঠগড়ায় আনতে হবে এবং চাকরিচ্যুত করতে হবে; মাদ্রাসার হল সুপার ও সহহল সুপারের বাসভবন ভেঙ্গে ফেলার ওয়ার্ক অর্ডার ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাতিল ঘোষণা করতে হবে; ছাত্রদের নামে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে; মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, কারা অধিদপ্তর ও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক দখলকৃত আলিয়া মাদ্রাসার দখল করা জমি আগামী ৩ মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য আরও আবাসিক হল নির্মাণ করতে হবে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র ও শিক্ষা জোন খ্যাত বকসিবাজারে অবস্থিত ২৫০ বছরের পুরনো দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকা স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু সংখ্যক কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে পড়েছে মাদ্রাসাটি। তারা ‘মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ভবন’ তৈরি করার নামে মাদ্রাসার একমাত্র ছাত্রাবাস আল্লামা কাশগরী হলের সুপার ও সহ-সুপারের বাস ভবন ভেঙ্গে ফেলার জন্য দরপত্র দিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) ইস্যু করেছে। আমরা প্রাক্তন ছাত্ররাসহ আলিয়া মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন থেকেই কুচক্রী মহলের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।
“এই দ্বীনী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্ররা কুচক্রী মহলের এমন উদ্যোগকে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকাকে ধংস করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র মনে করছি। আমরা এ উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীদেরকে তাদের ষড়যন্ত্র বন্ধ করার জন্য প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ইতোমধ্যে মাদ্রাসা ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রদের জোরপূর্বক বের করে দেয়া হয়, পরবর্তীতে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ হল খুলে দিতে বাধ্য হয়। হোস্টেল সুপার ও সহ-সুপাারদ্বয়কে তাদের বাসভবন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার একাডেমিক প্রধান হেডমাওলানা প্রফেসর আবদুল মান্নান সাহেব এবং হোস্টেল সুপার মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান সাহেবকে ওএসডি করা হয়েছে। আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। হোস্টেল সুপার এবং হোস্টেল সহসুপারের বাসভবন বিক্রির দরপত্র আহবান করে ইতোমধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আলীয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র সাগর আহমেদ শাহীন, মো. আ. ন. ম. নুরুন্নবী জনি, লতিফুল বারী রাকিব, শাহদাত হোসেন, ফারুক হেসাইন চৌধুরী শাওনসহ অনেকে।