শিক্ষকের সঙ্গে ব্যঙ্গ, ৬ ছাত্রকে হাতুড়িপেটা

বরিশালের গৌরনদী উপজেলা
বরিশালের গৌরনদী উপজেলা  © ফাইল ফটো

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী উলুমে দিনিয়া কওমি মাদ্রাসার নুরানি বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারির বিরুদ্ধে ৬ ছাত্রকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। এর আগে আরও ৪ ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষের মধ্যে পেটানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সোমবার (১ নভেম্বর) বিকালে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা মাদ্রাসা কতৃপক্ষ।

হাতুড়িপেটায় আহত ছাত্ররা হলেন- হাফেজ জাহিদুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, আবু ইউসুফ, সোয়াইব হোসেন, মো. হাসানউদ্দিন ও হাবিবুল্লাহ। গুরুত্বর আহত ছাত্ররা হলেন মো. শাহজালাল, মাহমুদ, রফিকুল ইসলাম ও মাহমুদ হোসেন।

এ বিষয় ছাত্ররা বলেন, নুরানি বিভাগের শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারিকে ব্যঙ্গ করে ডাকা এবং অসদাচরণ করে আসছিল কেতাব বিভাগের ছাত্ররা। এতে শিক্ষক মানিক ক্ষিপ্ত হয়ে সম্প্রতি কেতাব বিভাগের ছাত্র শাহজালাল ও মাহমুদকে শ্রেণিকক্ষে মারধর করেন। একই ঘটনার জেরে রবিবার বিকালে শাহজালালকে আবার মারধর করেন।

“সোমবার সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হাফেজ আমিনুল ইসলামের কাছে এ ঘটনায় অভিযোগ দেয় ছাত্ররা। অভিযোগ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রেণিকক্ষে কেতাব বিভাগের ছাত্র রফিকুল ইসলাম ও মাহমুদ হোসেনকে পিটুনি দেন শিক্ষক মানিক। এতে কেতাব বিভাগের ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে মানিককে ধাওয়া করে। মানিক দৌড়ে মাদ্রাসার মুহতামিমের কক্ষে আশ্রয় নিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা অবরুদ্ধ করে রাখে।’’

এরপর কেতাব বিভাগের ছাত্ররা অভিযোগ দিতে শিক্ষক মানিকের মামা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান প্যাদার বাড়িতে যায়। এ সময় হাফেজ মানিকের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন ছাত্রদের হাতুড়িপেটা করে। এতে ছয় ছাত্র আহত হয়।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির নির্দেশে কেতাব বিভাগের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছি। আমাকে ও কেতাব বিভাগের ছাত্রদের জঙ্গি বানানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি অসহায়।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহজাহান প্যাদা জানিয়েছেন, ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক মানিক বেপারির সঙ্গে বেয়াদবি করে আসছিল। এতে মানিক ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্র শাহজালালকে ঘুষি মারলে নাক ফেটে যায়। সোমবার দুপুরে ছাত্ররা আমার বাড়িতে এসে মানিকের ঘর ঘেরাও করলে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তবে ছাত্রদের হাতুড়িপেটার বিষয়টি সঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রদের মাদ্রাসায় যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বড় দুলালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শওকত হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এখন কোনও অভিযোগও আসেনি থানায়। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে শিক্ষক হাফেজ মানিক বেপারি বলেন, আমার ও মাদ্রাসার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কতিপয় ছাত্র মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে ঠিকই, কিন্তু হাতুড়িপেটা করা হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ