সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও থেমে নেই কওমি মাদ্রাসা

প্রতীকী
প্রতীকী

করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক গতিতে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে কওমি মাদ্রাসাগুলো। ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কওমী মাদ্রাসাগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানাগুলো না খুললেও গত ১২ জুলাই থেকে কওমি মাদ্রাসাগুলোর হিফজ বিভাগ খুলে দেয়ার অনুমতি দেয় সরকার।

এর আগে গত বছরের ১ জুন থেকে দেশের কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অফিস খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। পরে গত ৮ জুলাই এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর ২৫ আগস্ট কওমি মাদ্রাসার কিতাব বিভাগও খোলার অনুমতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ।

কওমি মাদ্রাসাগুলো খুলে দেয়ার কারণ হিসাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা আবাসিক। তারা নিজেরা তাদের সীমানার বাইরে যায় না। এ ছাড়া অনেক মাদরাসায় এতিম ও দুস্থ ছাত্ররা পড়ালেখা করে বলে মাদরাসা বন্ধ থাকলে তাদের থাকা-খাওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়বে।

কেন্দ্রীয় বেফাকের আমেলা সদস্য ও দেওভোগ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের জিহাদী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মাদ্রাসা চালাতে গিয়ে প্রথমে আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা রেখেছি। তারপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তাই মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করছেন।

এদিকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (কওমি ছাড়া) চলমান ছুটি আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ ২০২০ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ছিল। এবার সেই ছুটি ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ল।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকলেও সব প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ অনলাইন পাঠদান আর শ্রেণীকক্ষের পাঠাদানে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্যের আশঙ্কা করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব কিছু চলছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় বাজারে, সেখানে মানুষ ধাক্কাধাক্কি করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও তো ঘরে বসে নেই, তারা নানা জায়গায় যাচ্ছে। তবে এটা ঠিক, সবার আগে আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা। এর পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিত।


সর্বশেষ সংবাদ