১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:২০

বাংলায় ১৩টি ও উদুর্তে নয়টি বই লিখেছেন আল্লামা শফী

আল্লামা শাহ আহমদ শফী  © ফাইল ফটো

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আল-জামিয়াতুল তাহলিমা দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সাবেক মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী মারা গেছেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

এদিন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় আনা হয়েছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হাসপাতালের তৃতীয় তলার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) ৮ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়।

শাহ আহমদ শফী দেশের আলেম সমাজের খ্যাতিমান ইসলামি ব্যক্তিত্ব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আমীর ছিলেন। তিনি একইসাথে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের হাটহাজারীর মহাপরিচালক ছিলেন।

বর্ণাঢ্য জীবনে আল্লামা শফী লেখালেখিতেও ছিলেন বেশ পারদর্শী। শফীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসায়। এরপর পটিয়ায়র আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (জিরি মাদ্রাসা) লেখাপড়া করেন। ১৯৪০ সালে তিনি হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ১৯৫০ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় যান, সেখানে চার বছর লেখাপড়া করেন।

১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে যোগ দেন আহমদ শফী। এরপর থেকে টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি ওই পদে ছিলেন। দেশের আলেমদের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র আহমদ শফী বাংলায় ১৩টি এবং উদুর্তে নয়টি বইয়ের রচয়িতা। তবে নারীবিরোধী নানা বক্তব্যের জন্য বরাবরই সমালোচিত আহমদ শফী। আল্লামা শফীর গুরুত্বপূর্ণ ১০টি বই হলো-

উর্দু
১. ফয়জুল জারী (বুখারীর ব্যাখ্যা)।
২. আল-বায়ানুল ফাসিল বাইয়ানুল হক্ব ওয়াল বাতিল।
৩. ইসলাম ও ছিয়াছাত।
৪. ইজহারে হাকিকাত।
৫. বাংলা।

বাংলা
১. হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্ব।
২. ইসলামী অর্থ ব্যবস্থা।
৩. ইসলাম ও রাজনীতি।
৪. সত্যের দিকে করুন আহবান।
৫. সুন্নাত ও বিদ’আতের সঠিক পরিচয়।

এর গত দুইনের টানা বিক্ষোভের পর বৃহস্পতিবার রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা কমিটির সভায় আহমদ শফী মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তার ছেলে আনাস মাদানিকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতিও দেওয়া হয়। এর পরপরই মাদ্রাসা থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স যোগে আহমদ শফীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

১০৫ বছর বয়সী এ প্রবীণ আলেম ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। ফলে প্রায়ই ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গত কয়েক মাসে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিলে একাধিকবার চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসা নিতে হয় বড় হুজুরখ্যাত আল্লামা শফীকে।