চার মাস বেতন পাচ্ছেন না ইবতেদায়ি মাদরাসার ১০ হাজার শিক্ষক
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রায় ১০ হাজার শিক্ষকের পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উদাসীনতার কারণে চার মাস পার হলেও সরকারি বেতনের টাকা ছাড় হয়নি তাদের। তাই, সংকটে পড়েছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের দাবি, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। টাকা না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার কিনতে পারছেন না। দ্রুত বেতন ছাড় না করলে পরিবার নিয়ে অনাহারে মারা যেতে হবে বলে শিক্ষকরা আশঙ্কা করছেন। তারা দ্রুত এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী বেতন ছাড় করার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে ১৭ মার্চ হঠাৎ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, আমরা মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ছাড়ের ব্যবস্থা নিচ্ছি।
জানা যায়, সারাদেশে প্রায় ১০ হাজার ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে। এর মধ্যে এক হাজার ৫১৯টি মাদরাসার চারজন করে শিক্ষক সরকার থেকে মাসিক ২ হাজার ৩০০ টাকা অনুদান পান। আর মাদরাসার প্রধানরা মাসিক ২ হাজার ৫০০ টাকা পান। তাই, স্বল্প টাকায় শিক্ষকদের অভাব-অনটনে সংসার চলে।
ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সরকারি অনুদানের টাকা তিন মাস পর পর মাদরাসা অধিদপ্তর থেকে ছাড় করা হয়। সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসে শিক্ষকদের বেতন ছাড় করা হয়েছে। সে হিসাবে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন মার্চ মাসে ছাড়ের কথা ছিল। কিন্ন্তু মার্চ মাস পার হয়ে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ শেষেও শিক্ষকরা বেতনের টাকা পাননি।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের মহাসচিব মো. শামছুল আলম বলেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী আমরা বেতন পাচ্ছি না। আগে তিন মাস পর পর বিল ছাড়তো। সর্বশেষ চার মাস পর বিল ছাড় করেছে। এখন চার মাস পার হলে গেলেও আমরা বেতন পাইনি। অথচ নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে প্রতিমাসে বেতন ছাড়ের। কর্মকর্তারা নীতিমালাও বাস্তবায়ন করেন না। বেতনও ছাড় করেন না।
তিনি আরও বলেন, কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে বর্তমান করোনা পরিস্থিতির সংকটকালে বেশিরভাগ শিক্ষক বেতন না পেয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করছেন। তারা লজ্জায় কারও কাছে হাত পাততে পারছেন না। দ্রুত বেতন ছাড় না করলে আমাদের না খেয়ে মারা যেতে হবে। মন্ত্রণালয়ের মাদরাসা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার বিপক্ষে।