নিখোঁজ মাদ্রাসা ছাত্রী সারজিনকে ‘জিনে’ নিয়ে গেছে: কর্তৃপক্ষ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:০৭ PM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:২৪ PM
রাজধানীর বাউনিয়া বাঁধ এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী নিখোঁজ হয়েছেন। ওই ছাত্রীর অভিভাবকদের দাবি, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে, ওই ছাত্রীকে ‘জিনে’ নিয়ে গেছে। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন নিখোঁজ ছাত্রীর বাবা মো. শরীফ উল্লা ও তার মা শিল্পী আক্তার।
নিখোঁজ মেয়েটির নাম সারজিন আক্তার। সে মিরপুরের শাহ্ আলীবাগের বাসিন্দা মো. শরীফ উল্লার মেয়ে। গত ৪ বছর ধরে বাউনিয়া বাঁধ জামিয়া ফোরকানিয়া তালিমিয়া মহিলা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছিল।
সংবাদ সম্মেলনে শরীফ উল্লা বলেন, গত ৮ আগস্ট ঈদুল আজহার ছুটিতে আমরা সারজিনকে বাসায় নিয়ে যাই। এরপর ২৭ আগস্ট ছুটি শেষে আমি তাকে মাদরাসায় দিয়ে আসি। ৩১ আগস্ট বিকেলে মাদ্রাসা থেকে আমাকে ফোন করে বলা হয়, আমার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন আমি মাদ্রাসায় যাই। গেটে গিয়ে দারোয়ানকে বলি মেয়েকে ডেকে দিতে। অনেকক্ষণ পর দারোয়ান ভেতর থেকে গেটে এসে জানালেন, আমার মেয়েকে নাকি সকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুর পর্যন্ত সে ফেরেনি। তখন আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক শিক্ষক ও মাদ্রাসার আপাকে ফোন করে আমার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাই। তখন তারা আমাকে বিভিন্ন ধরনের কথা বলেন।
একবার বলেছেন, তার বাবা এসেছে বলে দেখা করতে গেটে গিয়েছিল, আর ফেরেনি। আরেকবার বলেন, আমার মেয়ের উপর নাকি জিন আছে, তাকে নাকি জিনে নিয়ে গেছে। আবার বলে, আমার মেয়ে নাকি অসুস্থ, অজ্ঞান হয়ে সিঁড়িতে পড়ে গেছে।
মেয়েকে খুঁজতে মাদ্রাসার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চেয়েছিলেন বলে জানান শরীফ উল্লা। তবে তাকে তা দেখতে দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
শরীফ উল্লা বলেন, পরদিন ১ সেপ্টেম্বর আমি পল্লবী থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। জিডির ৩ দিন পর পুলিশ মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলে ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে চায়। তখন পুলিশ দেখে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল।
তিনি জানান, এরপর একটি প্রতারক চক্র পল্লবী থানায় ফোন করে নরসিংদীতে সারজিনকে পাওয়া গেছে বলে জানায়। সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে নিলে ফোনে টাকা দাবি করা হয়। এরপর তারা নিশ্চিত হন যে, এটি প্রতারক চক্র। তিনি বলেন, এছাড়াও কয়েকটি নম্বর থেকে ফোন করে আমার মেয়ে তাদের কাছে আছে বলে দাবি করে ১ লাখ টাকা করে চায়। কিন্তু পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে তারাও প্রতারণা করছে।
তিনি বলেন, আজ (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত আমার মেয়ের সন্ধান পাইনি। আমি জানি না, সে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে। মেয়েকে খুঁজে পেতে তিনি প্রধানমন্ত্রী, পুলিশ এবং ১৬ কোটি মানুষের সাহায্য চান।