বিজ্ঞপ্তিতে ক্লাসের কথা থাকলে বাস্তবে বন্ধ তা'মীরুল মিল্লাত, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা
গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসায় ৩০ নভেম্বর থেকে পাঠদান কার্যক্রম পুনরায় চালুর নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও শিক্ষকরা ক্লাস না নেওয়ায় চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি পদক্ষেপ, অধ্যক্ষের বিজ্ঞপ্তির পরেও ক্লাসে ফেরেননি শিক্ষকরা। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ আইউব হোসেন গত ২৭ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩০ নভেম্বর থেকে মাদরাসায় পুনরায় পাঠদান চালুর নির্দেশনা দেয়।
ভাইস-চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জারি করা নির্দেশনা তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ বরাবর পাঠানো হয় এবং উপ-রেজিস্ট্রার ফাহাদ আহমদ মোমতাজী স্বাক্ষরিত অনুলিপিতে বিষয়টি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে আজ ৩০ নভেম্বর ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেননি। ফলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও অধ্যক্ষের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকরা ক্লাসে না আসায় আমাদের সময়, পড়াশোনা সবই নষ্ট হচ্ছে।’
শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, বহিষ্কার হওয়া ৩ শিক্ষকের বহিষ্কারাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক ক্লাস নেবেন না। শিক্ষার্থীদের শাসন করায় যদি শিক্ষকদের বহিষ্কার হতে হয় তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা চরম অবনতি হবে। তা'মীরুল মিল্লাতের সাথে যায় না এমন বহিষ্কারাদেশ। অবশ্যই সকল বিষয় বিবেচনা করে বহিষ্কারাদেশ বাতিল করতে হবে। বহিষ্কার কোন সমাধান না। ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক।
গত ১৮ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এতে অন্তত ৫ শিক্ষক আহত হওয়ার অভিযোগ করেন এবং একাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার কথাও জানান।
আন্দোলনর শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি প্রফেসর কোরবান আলী ৩ শিক্ষককে বহিষ্কার করেন। এরপর থেকে শিক্ষকরা ১৯ নভেম্বর থেকে টানা কর্মবিরতি পালন করছেন। বর্তমানে মাদরাসায় শিশু থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষার বাইরে অন্য কোনো একাডেমিক কার্যক্রম চলছে না।
এবিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমানের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
দীর্ঘ অচলাবস্থা ও নির্দেশ অমান্যের ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে— পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান না হলে পরীক্ষাসহ আগামীর একাডেমিক সময়সূচি পুরোপুরি ভেঙে পড়বে।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আশা প্রকাশ করেছে, নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাদরাসা দ্রুত স্বাভাবিক একাডেমিক পরিবেশে ফিরবে।