২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২২:৩১

ময়মনসিংহে মাদ্রাসায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ডিসির প্রত্যাহার দাবি শিক্ষার্থীদের

ময়মনসিংহে বড় মসজিদ মাদ্রাসায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ  © সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদ মাদ্রাসায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে এক শিক্ষকসহ আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মাদ্রাসা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলমের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। তাঁরা জেলা প্রশাসককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, সোমবার রাতে স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের বৈঠকের পর হঠাৎ উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. শহীদুল্লাহ আহত হন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, “একটি পক্ষ প্রভাব খাটিয়ে বিতর্কিত শিক্ষক হাফেজ শহীদুল্লাহকে মাদ্রাসায় প্রবেশ করালে উত্তেজনা দেখা দেয়।”

ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম সোমবার রাতেই মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। তবে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের একাংশ এ আদেশ মানেননি। বরং তাঁরা মঙ্গলবার থেকে ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে প্রধান দাবি—ডিসিকে প্রত্যাহার। অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে: হাফেজ শহীদুল্লাহর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ, নতুন মাদ্রাসা কমিটি গঠন, হামলার অভিযোগে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার।

কোতোয়ালি থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, “বিবদমান দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত।”

জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম বলেন, “বৈঠকে উভয় পক্ষের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছিল, কিন্তু পরে হঠাৎ হামলার ঘটনা ঘটে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”

প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এই মাদ্রাসায় গত এক বছরে শিক্ষক–শিক্ষার্থী বিভাজনের কারণে উত্তেজনা বারবার দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, দ্রুত প্রশাসনিক ও কমিটিভিত্তিক সমাধান না হলে এই ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে।