চুরির অপবাদ দিয়ে শিক্ষার্থীর হাত ঝলসে দেবার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
চট্টগ্রামের পটিয়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর হাত ঝলসে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত (বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট) রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে মাত্র ২০ টাকার অপবাদ দিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া পৌর সদরের শাহ মজিদিয়া রশিদিয়া হেফজখানা ও এতিমখানার ৭ বছরের এক শিক্ষার্থীর হাত ঝলসে দেবার এই ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী হলেন- মোঃ সোহান (৭) ।চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়া এলাকার মোঃ হেনাম উদ্দীনের পুত্র। সোহান তার মামারবাড়ীর লোকজনের কাছে থেকে পড়াশোনা করছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে মাত্র ২০ টাকার অপবাদ দিয়ে সোহানের হাত গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখার নির্দেশ দেন মাদ্রাসাটির এক শিক্ষক। ওই শিক্ষকের নির্দেশে তার কয়েকজন সহপাঠী জোরপূর্বক তার হাত গরম পানিতে চুবিয়ে রাখে। এসময় তাকে চিৎকার ও কান্নাকাটি করতে দেখেও কেউ কর্ণপাত করেনি। পরে, অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আহত অবস্থায় সোহানকে একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় গত ৪ই সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) আহত সোহানের বাবা মোঃ হেনাম উদ্দীন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্র জানায়, পটিয়া ওয়াপদা রোডের এই মাদ্রাসায় ৭ বছর বয়সী সোহান নামের এক শিক্ষার্থীকে ২০ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে তার সহপাঠী ও অভিযুক্ত শিক্ষক জাবেদ মিলে তাকে মারধর এবং তার হাত ফুটন্ত গরম পানিতে চুবিয়ে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। শিশুটির বাবা বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে অভিহিত করলেও কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তার পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করা হচ্ছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
সোহানের বাবা মোহাম্মদ হেনাম উদ্দীন বলেন, ‘আমার ছেলের সাথে এই ধরনের নির্মম একটি ঘটনা ঘটায় আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। এখন আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা হুমকির মুখে। আমি এই ঘতনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ সোহানের মামা শওকত আকবর বলেন, ‘আমার ভাগ্নের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হলেও তারা কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বরং ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে যাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে মাদ্রাসাটির সেক্রেটারি মোঃ ইসহাক ঘটনাটি মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘শিশুটি তার সহপাঠীদের সাথে মজাচ্ছলে হাত পানিতে চুবিয়েছে। বাচ্চাটি তখন চুরি করলে তার সহপাঠীরাই তার হাত গরম পানিতে চুবিয়ে রাখে। ঘটনার সময় অভিযুক্ত শিক্ষক মাদ্রাসায় ছিলেন না বলেও দাবি করেন তিনি।’তিনি আরও বলেন, ‘গরম পানি গুলো বাচ্চাদের শরীরে চর্মরোগের ওষুধ প্রয়োগের জন্য রাখা হয়েছিল। ঘটনার পর থানা পুলিশ কর্তৃক স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করা হয় বলেও জানান তিনি।’
ঘটনাটি ভিন্ন দাবি করে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য নয়, ভিন্ন। বিষয়টি খতিয়ে দেখ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’