প্রক্রিয়াধীন থাকা মাদ্রাসার গ্রন্থাগার শিক্ষক-প্রভাষক নিয়োগ আগের নিয়মে শেষ করার দাবিতে অবস্থান
নতুন নিয়ম চালুর সময় প্রক্রিয়াধীন থাকা মাদ্রাসার গ্রন্থাগার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক নিয়োগ আগের নিয়মে শেষ করার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীরা।
রবিবার (৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর নিউ বেইলি রোডে গাইড হাউসে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। প্রার্থীরা বলছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা না করলে বিকালের পর তারা অনশন বা কঠোর কর্মসূচি শুরু করবেন। ‘গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান চাকরি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
আরও পড়ুন : প্রক্রিয়াধীন থাকা মাদ্রাসার গ্রন্থাগার শিক্ষক-প্রভাষক নিয়োগ আগের নিয়মে শেষ করার দাবি
চাকরি প্রত্যাশী প্রার্থীরা বলছেন, ২০১৮ সালে এমপিও নীতিমালায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক নামে এ পদ দুটি সৃষ্টি করে ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ শুরু হয়। তবে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে ওই দুই পদে নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন বন্ধ করে দেয় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। ফলে প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রমগুলো আটকে যায়। পরে একই বছর জুলাইতে ওই দুই পদকে শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় বেসরকারি শিক্ষক-নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ)। ফলে প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রম আর শুরু করা যায়নি। প্রার্থীরা সে সময় প্রক্রিয়াধীন থাকা মাদ্রাসার গ্রন্থাগার বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক পদগুলোর নিয়োগ আগের নিয়মে শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।
প্রার্থীরা বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ আলোকে সারা দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক পদ সৃষ্টির পর ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে নিয়োগ শুরু হয় এ দুই পদে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন সচিবের মৌখিক নির্দেশনায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ওই দুই পদে নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়া হয়নি। পরে ২০২১ সালের ১৮ জুলাই ওই পদ দুটিকে শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক নামকরণ করা হয়। শিক্ষক মর্যাদা দেয়ায় ওই পদ দুটিতে নিয়োগ সুপারিশের দায়িত্ব চলে যায় এনটিআরসিএর হাতে। বলা হয়, এ দুই পদে আর কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হবে না। প্রচলিতভাবে কোন নিয়োগের নিয়ম বা পদ্ধতি পরিবর্তন হলে প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রম আগের নিয়মে চালানোর নির্দেশনা আসে। কিন্তু মাদ্রাসার গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ে সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি।
আরও পড়ুন : নতুন এমপিও নীতিমালা: গ্রন্থাগারিকরা এখন থেকে শিক্ষক
পরিষদের সভাপতি খান সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা চাকরির আবেদন করে নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন সচিব মৌখিক নির্দেশনায় ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন বন্ধ থাকে। পরে ২০২১ সালের ১৮ জুলাই ওই পদগুলোকে শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে নিয়োগের দায়িত্ব এনটিআরসিএকে দেয়া হয়। আমরা সরকারের এই যুগোপযোগী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই, তবে অতীতের বিভিন্ন সময় এরকম অফিস আদেশ বা পরিপত্রের একাংশে আগে আবেদন করা চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ কার্যক্রম আগের নিয়মে সম্পন্ন করার সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু মাদ্রাসার গ্রন্থাগার শিক্ষক ও প্রভাষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তা হয়নি।
আরও পড়ুন : মাদ্রাসায় গ্রন্থাগারিক-সহকারী গ্রন্থাগারিক নিয়ে সিদ্ধান্ত শিগগির: মন্ত্রণালয়
তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসার প্রক্রিয়াধীন থাকা নিয়োগ পরীক্ষা পূর্বের নীতিমালা অনুযায়ী সম্পন্ন করার দাবিতে আমরা সারা দেশের চাকরিপ্রত্যাশীরা গত তিন বছর ধরে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনসহ বিভিন্ন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধরনা দিয়েও এখনো পর্যন্ত কোনো সমাধান পাইনি। চাকরির নির্ধারিত বয়স প্রায় শেষের দিকে, তাই চরমভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছি। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন, তবে আমরা কোন সমাধান পাইনি। তাই আমরা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি। বিকালের মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আমাদের কোন সিদ্ধান্ত না জানালে আমরা কঠোর কর্মসূচি, এমন কী আমরণ অনশনের ঘোষণা দেব।
অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম, ওলিউর রহমান, আশিকুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, আবু ইউসুফ আনসারী, মুজিবুর রহমান ক্বাদরী,বেলাল হোসাইন, রেজাউল করিম, মোস্তফা কামাল, আমির হোসেন, আবু জাফরসহ অনেকে।