১৮ আগস্ট ২০২৪, ২২:৫১

৫ আগস্টের আনন্দ মিছিল থেকে নিখোঁজ, ১১ দিন পর হিমঘরে মিলল লাশ

৫ আগস্টের আনন্দ মিছিল থেকে নিখোঁজ, ১১ দিন পর হিমঘরে মিলল লাশ
মো. আয়াতুল্লাহ  © সংগৃহীত

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আনন্দ মিছিলে গিয়েছিলেন সুনামগঞ্জের মো. আয়াতুল্লাহ (২২)। সেখানে নিখোঁজ হন তিনি। ১১ দিন পর তার সন্ধান মেলে রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে। 

আয়াতুল্লাহর জন্ম সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার হাওরপাড়ে। তবে বেড়ে ওঠা রাজধানীর নিকটবর্তী গাজীপুর শহরে। বাবা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে তার পরিবার চলে এসেছিল এখানে। ভাইবোনদের মধ্যে সবার ছোট আয়াতুল্লাহর পড়ালেখা চলত মাদ্রাসায়। বাবার সঙ্গে কাজ করতেন আয়াতের বড় ভাই সোহাগ মিয়াও।

আর্থিক সংকটের মুখে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় তার। এক পর্যায়ে পরিবারের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি মধ্যনগর উপজেলার জলুষা গ্রামে ফিরে আসেন তিনি। মাস দেড়েক আগে পরিবারের অভাব দূর করতে তিনি ফিরে আসেন গাজীপুরে। কালিয়াকৈরে একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি নেন আয়াতুল্লাহ।

গাজীপুরের সফিপুর আনসার অ্যাকাডেমির সামনে ৫ আগস্ট বেলা ২টার দিকে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন আয়াতুল্লাহ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছিল আন্দোলনকারীদের। একপর্যায়ে নিখোঁজ হন আয়াতুল্লাহ। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গত শুক্রবার টেলিভিশনে বেওয়ারিশ লাশের খবর দেখে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আয়াতুল্লাহর লাশের সন্ধান পেয়েছেন স্বজনেরা। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পরিবারের কাছে তাঁর মরদেহ হস্তান্তর করে কর্তৃপক্ষ।

আয়াতুল্লাহর বড়ভাই সোহাগ মিয়া জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন হওয়ার পর তারা দুইভাই আনন্দ মিছিলে যোগ দেন। মিছিলটি কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকা থেকে শুরু হয়ে সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমির কাছে পৌঁছায়। পরে এলোপাতাড়িভাবে সেখানে গুলি চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে বহু মানুষ আহত হয়। নিখোঁজ হয় আয়াতুল্লাহ। বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গ থেকে আয়াতুল্লাহ লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মবিন আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহতের পরিবার মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।