৩০ মে ২০২৪, ০৭:০৮

বৃষ্টিতে ক্লাসে না যাওয়ায় ছাত্রকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন শিক্ষক

আশুলিয়া থানা  © ফাইল ছবি

সাভারের আশুলিয়ায় বৃষ্টির কারণে মাদ্রাসায় উপস্থিত না হতে পারায় আরাফাত ইসলাম রায়হান (১২) নামের শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়েছে মাদরাসার এক শিক্ষক। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

বুধবার (২৯ মে) রাতে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাজহার। এর আগে গত সোমবার ওই শিক্ষার্থীকে পেটানোর পর মঙ্গলবার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী  শিক্ষার্থীর বাবা কামরুল ইসলাম। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরাফাত ইসলাম রায়হান (১২) আশুলিয়ার কান্দাইল নয়াপাড়া এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিক কামরুল ইসলামের ছেলে। রায়হান পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় বসবাস করে স্থানীয় কান্দাইল হাকিম মার্কেট এলাকার কান্দাইল আবরার কাউনিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম নাঈম। তবে তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, ওই মাদরাসায় আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। আমার ছেলেকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আবাসিকে রাখতে চাইলে ছেলে রাজি হয় নি। সে দেড় বছর ধরে বাসায় থেকে ওই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করত। গত সোমবার সকালে রায়হানকে মাদরাসায় দিয়ে আমি কাজে যাই। রাতে বাসায় ফিরে দেখি ছেলে হাঁটতে পারছে না। পরে দেখি কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত জখমের দাগ। ছেলের কাছে জানতে চাইলে মারধরের বর্ণনা দেয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।
   
তিনি আরও বলেন, পরদিন মঙ্গলবার সকালে ছেলেকে নিয়ে মাদরাসায় গিয়ে মারধরের কারণ জানতে চাইলে উলটো তারা আমার ছেলেকেই অপরাধী বানায়। আমার ছেলে না কি শিক্ষককে ধাক্কা দিয়েছে। এজন্য তাকে শাসন করা হয়েছে।

এ সময় মাদরাসার সভাপতি মনির, প্রিন্সিপাল ও পিয়ার আলীর উপস্থিতিতে আমার ছেলেকে ওই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। বিচার না পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই আশুলিয়া থানায় আমি লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মাদরাসায় গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষক নাঈমকে আটক করতে পারে নি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রায়হান জানান, গত রবিবার বৃষ্টির কারণে মাদরাসায় যেতে পারিনি। সোমবার বাবা আমাকে মাদরাসায় দিয়ে কাজে যায়। পরে রবিবার মাদরাসায় না আসার কারণে আমাকে পিটিয়ে আটকে রাখে নাঈম হুজুর। সন্ধ্যার দিকে সবাই মাগরিবের নামাজ আদায় করতে গেলে আমি পালিয়ে বাসায় চলে যাই।

এ বিষয়ে আশুলিয়ার থানার সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) মাজহার বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগীরা বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতাল ভর্তি রয়েছে। তবে ভুক্তভোগীর বাবা কামরুল ইসলাম মীমাংসা বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।