নোটিশ যাচ্ছে শূন্য পাস ৯ মাদ্রাসায়, হতে পারে এমপিও বাতিল
টাঙ্গাইল জেলার সখীপুরের ইছাদীঘি দাখিল মাদ্রাসা থেকে এ বছরের দাখিল পরীক্ষায় ২১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেও তাদের কেউ পাস করতে পারেনি। অথচ এমপিওভুক্ত এই মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি মাসে সরকার থেকে বেতনের শতভাগ মূল অংশ ও কিছু ভাতা পান।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে এবার মোট ৪১টি মাদ্রাসা থেকে একজন পরীক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে নয়টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত, এর মানে হলো এগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মূল বেতনসহ কিছু ভাতা পান।
এখন এই নয়টি মাদ্রাসার এমপিওভুক্তি বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। তারই আলোকে ওই মাদ্রাসাগুলোর এমপিওভুক্তি কেন বন্ধ করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া যেগুলো এমপিওভুক্ত নয়, সেগুলোকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে—জানানো হয়েছে অধিদপ্তর থেকে।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসাইন বলেন, শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত ২৮ জুলাই এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে এবার সারা দেশের ২৯ হাজার ৭১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন। পাস করেছে ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন।
এবছরও দেশে মোট ৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করতে পারেনি। এর মধ্যে ৪১টিই মাদ্রাসা। গত বছরও ৪১টি মাদ্রাসা থেকে একজন পরীক্ষার্থীও পাস করেনি।
মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, শূন্য পাস করা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নওগাঁর পত্নীতলার চক ফরিদ মেহেরুল্লা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৬ জন পরীক্ষা দিলেও কেউ পাস করেনি। একই উপজেলার বড় বিদিরপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ২০ জন ও হলাকান্দর সাবেদ আলী দাখিল মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ১৯ জন। কিন্তু কেউ পাস করেনি।
আরও পড়ুন: ‘মানবিক কারণে’ ছাত্রলীগের ৯ নেতার বহিষ্কার বাতিল চবির
শূন্য পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে—মো. জাকির হোসাইন, উপপরিচালক (প্রশাসন), মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
এর মধ্যে হলাকান্দর সাবেদ আলী দাখিল মাদ্রাসাটি ২০০০ সালে এমপিওভুক্ত হয়। অর্থাৎ তখন থেকেই মাদ্রাসাটির শিক্ষকেরা সরকার থেকে বেতনের একটি অংশ পান।
এ নিয়ে হলাকান্দর সাবেদ আলী দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমান দাবি করেন, করোনার পরও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আনা যায়নি। তাঁর মতে, এটিই মূল কারণ।
যশোরের মনিরামপুরের হায়াতপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৫ জন এবং একই উপজেলার শমসেরবাগ দাখিল মাদ্রাসা থেকে সাতজন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্ল্যাপুর দারুছ্ছালাম মহিলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৫ জন এবং রাজশাহীর তানোরের ময়েনপুর আলীতলা দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১২ জন পরীক্ষা দিলেও কেউ পাস করতে পারেনি।
এছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাতোর আর এফ এস দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৫ জন পরীক্ষা দিলেও সবাই অকৃতকার্য হয়েছে। তবে মাদ্রাসার সুপার বেলায়েত হোসেন বলছেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে একটি সমস্যা হয়েছিল। বিষয়টি জানিয়ে তাঁরা বোর্ডে আবেদন করেছেন। মাদ্রাসাটি ২০০১ সালে এমপিওভুক্ত।