অন্য মসজিদে নামাজ পড়িয়ে চাকরিচ্যুত হলেন মাদ্রাসা শিক্ষক

টেংগুরি দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসা
টেংগুরি দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসা  © ফাইল ছবি

ঢাকার আশুলিয়ায় মাদ্রাসার বাইরে মসজিদে ইমামতি করায় শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কোনাপাড়া টেংগুরি দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। 
 
ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মাওলানা মো. হাবীবুল্লাহ। তিনি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার শাহনগর এলাকার মাওলানা মোবারক হোসেনের ছেলে। মাদ্রাসাটির কিতাব বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক তিনি। আর অভিযুক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের নাম মুজিবুর রহমান। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। 
 
ভুক্তভোগী মো. হাবিবুল্লাহর দাবি, এ বছরের রমজানে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমানের অনুমতি নিয়েই পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদে ইমামতি ও তারাবির নামাজ পড়িয়েছেন তিনি। পরে প্রধান শিক্ষক নিষেধ করলে ইমামতি করা বাদ দেন। তারপরও তাকে ইমামতি করার অপরাধে মাদ্রাসা থেকে চাকুরীচ্যুত করেন প্রধান শিক্ষক। এরপর বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন মন্ডলকে জানালে তিনিসহ আরো কয়েকজন সুরাহা করে দেন এবং তাকে মাদ্রাসার চাকরিতে বহাল রাখেন।

তিনি বলেন, বৃহষ্পতিবার (২৫ মে) সকালে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি জয়নাল বেপারীসহ আরো বেশ কয়েকজন সদস্য তাকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন। বলে দেন, বেশী বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি খারাপ হবে বলেও হুমকি দেন তারা।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসাটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন মন্ডল জানান, এই কাজটি অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ হয়েছে। মাদ্রাসার কোন শিক্ষক অপরাধ করলে বা বাদ দিতে হলে কমিটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। প্রধান শিক্ষক একার সিদ্ধান্তে কাউকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিতে পারেন না।

সুমন মন্ডল আরো বলেন, মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস চালু করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত চালাতে পারবেন না। কারণ তার এই ব্যাপারে শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। তবে যাকে বের করে দিয়েছেন, তিনি দাওরায়ে হাদিস কমপ্লিট করে উচ্চতর হাদিসে অধ্যয়ন করছেন। হয়ত এই ভয়েই তিনি তাকে কোন কারণ ছাড়াই বের করে দিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে সেক্রেটারির সাথে কথা হয়েছে। কারো একার সিদ্ধান্তে মাদ্রাসা থেকে কাউকে বের করে দেওয়ার কোন নিয়ম নেই।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসাটির প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না, এটা সভাপতি জানেন।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সভাপতি জামাল বেপারী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ওই শিক্ষক অন্য একটি মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ায়। এতে মাদ্রাসার ছাত্রদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটে। এ বিষয়ে ওই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বেচ্ছায় মাদ্রাসা থেকে চলে যান। তার পাওনাদি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করেছে।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিনুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ