নিয়োগের পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদ থেকে হিন্দু শিক্ষককে অব্যাহতি

দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা
দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা  © সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের একটি মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষককে। শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বসাক মাত্র তিন দিন আগেই শহরের দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এর আগে, তিনি ওই মাদ্রাসার প্রভাষক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা কমিটি তাকে সরিয়ে এর আগে দায়িত্বে থাকা মাওলানা সোহরাব হোসেনকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়। একই সঙ্গে, মাদ্রাসাটিতে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রমও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গোপাল চন্দ্র বসাক বলেন, ‘১৯৯১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় প্রভাষক পদে যোগদান করি। সে সময় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ছিলেন মওলনা আবু সাঈদ।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২০ সালে আবু সাঈদ মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান প্রতিষ্ঠানের আরেক শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেন। প্রায় দুই বছর তিনি দায়িত্ব পালনের পর গত ১২ সেপ্টেম্বর আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।’

আরও পড়ুন: পর্দার কারণে ভাইভায় মুখ দেখাতে না পেরে নম্বরবঞ্চিত হচ্ছেন ঢাবি ছাত্রী

দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় প্রভাষক মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘অধ্যক্ষ মওলানা আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান মো. সোহরাব হাসেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর সোহরাব হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন। এতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদটি শূন্য হয়ে যায়। যে কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক গোপাল চন্দ্র বসাককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।’

সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল হাবীবকে। কিন্তু শুক্রবার সকালে মাদ্রাসা কমিটির জরুরি সভায় সোহরাব হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে টাঙ্গাইলের কোথাও কোনো পক্ষকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। তবে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার অপসারণের দাবি তোলে।

তাদের ভাষ্য, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে একজন হিন্দু শিক্ষকের নিয়োগ ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার শামিল। তারা বিষয়টিকে “দেশের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের প্রচেষ্টা” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

এদিকে, মাদ্রাসা কমিটি প্রেসিডেন্ট কুদরত-এ-এলাহীর দাবি, গোপাল চন্দ্র বসাককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এবং মাদ্রাসার সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ