বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের পদত্যাগ
বাংলা একাডেমির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কথাসাহিত্যিক ও লেখক সেলিনা হোসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেছেন বলে জানিয়েছেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।
তিনি বলেন, ‘সেলিনা হোসেন পদত্যাগপত্রে সই করেছেন। তবে সভাপতির পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটি সম্পন্ন না হলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে পারছি না যে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এটি যেহেতু প্রক্রিয়াধীন, তাই পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে সেটি আমরা সবাইকে জানাব।’
পদত্যাগের বিষয়ে সেলিনা হোসেন বলেন, বাংলা একাডেমি থেকে কর্মকর্তারা এসেছিলেন আমার বাসায়। আমি তাদের কাছে পদত্যাগপত্র সই করে দিয়েছি।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি একাডেমির সভাপতি পদে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি এই দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি ৩৪ বছর চাকরিজীবন কাটিয়েছেন একাডেমিতে।
সেলিনা হোসেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, গবেষক এবং প্রাবন্ধিক। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি একাধিক মেয়াদে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। উপন্যাসে অবদানের জন্য ১৯৮০ সালে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ পান। ২০০৯ সালে ভাষা ও সাহিত্যে ‘একুশে পদক’ এবং ২০১৮ সালে তিনি সাহিত্যে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ পান।
১৯৪৭ সালের ১৪ জুন লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন বিশিষ্ট এই কথাসাহিত্যিক। বগুড়ার লতিফপুর প্রাইমারি স্কুলে পড়ালেখার পর রাজশাহীর নাথ গালর্স স্কুল থেকে ১৯৬২ সালে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।
১৯৬৪ সালে রাজশাহী মহিলা কলেজে ভর্তি হন। কলেজজীবন শেষ করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে ১৯৬৭ সালে বিএ অনার্স এবং ১৯৬৮ সালে এম এ পাস করেন।
ষাটের দশকের মধ্যভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় লেখালেখির সূচনা। তার লেখা প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘উৎস থেকে নিরন্তর’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে।
সেলিনা হোসেন রচিত উপন্যাসের সংখ্যা ৩৫টি, গল্প গ্রন্থ ১৩টি, ২২টি শিশু-কিশোর গ্রন্থ এবং প্রবন্ধের গ্রন্থ ১০টি। এ ছাড়া ১৩টি সম্পাদনা গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন তিনি।
সেলিনা হোসেন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক হন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন চাকরি থেকে অবসর নেন।