‘কাটা যায় না, ভাঙা যায় না’ আমি এখন জলের মতন
একটা দুঃসংবাদ আছে। যারা আমাকে ভেঙে-চুরে টুকরো কাঁচের মতো ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলো, তাদের জন্য। দুঃসংবাদটি তাদের জন্যও, যারা ভেবেছিলে আমি হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারব না। মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবো গা ঘিনঘিনে কাদায়।
আমাকে ছিঁড়ে কাগজের মতো কুচিকুচি করে হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলে আমি হারিয়ে যাবো দিকশূন্যপুর। যে আমাকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে নিতে চেয়েছিলো অতলান্তিক বিষাদ সমুদ্রে, ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিলো এক পৃথিবী বিবমিষায়।
আরও পড়ুন: মানুষ বড্ড অভিমানী প্রাণী, অভিমানে সে ক্রমশই দূরে চলে যায়
যে আমাকে অযুত রাতের কান্না লিখে দিয়ে বুকের ভেতর খুঁড়ে দিতে চেয়েছিলো শ্যাওলা জমা স্যাঁতসেঁতে এক মজা পুকুর। যে আমাকে দুঃখ দিয়ে, পুড়িয়ে শেষে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলে ছাইয়ের মতন। তাদের জন্য দুঃসংবাদ।
আরও পড়ুন: একজন আমার গলা কেটেছিল, সেই শোকে আমিও কাটা শুরু করলাম
আমি এখন পাখির মতন,আমায় ছিঁড়ে কুচিকুচি ভাসিয়ে দিলে, এখন আমি ডানা মেলে আকাশজুড়ে উড়তে জানি। কাটা যায় না, ভাঙা যায় না, আমি এখন জলের মতন। ভেসে যেতে যেতেও হঠাৎ জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে দিতে আমিও জানি। আমিও জানি ছড়িয়ে থাকা টুকরো কাঁচের শরীর থেকে, দু ফলা এক ছুরি হতে।
এই যে মানুষ দুঃখ দিতে দক্ষ ভীষণ, সেও জানুক আমি এখন হাসতে জানি, শ্যাওলা জমা পুকুর জুড়ে আমিও এখন রোদের মতো ভাসতে জানি। প্রস্থানের গল্প লিখেও ইচ্ছে হলেই আবার ফিরে আসতে জানি। আমি এখন পুড়ে যাওয়া ছাইয়ের ভেতর জেগে ওঠা ফিনিক্স পাখি। আমি এখন মৃত্যু মেরে বাঁচতে জানি। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]
লেখক: কবি ও ঔপন্যাসিক