ডিআরইউ সাহিত্য পুরস্কার জিতলেন এম মামুন হোসেন
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক সময়ের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার এম মামুন হোসেন। ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে ‘আদি অন্তে ঢাকা’ বইয়ের জন্য মননশীল (প্রবন্ধ ও গবেষণা) ক্যাটাগরিতে তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
লেখকদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এ বছর প্রথমবারের মতো সাহিত্য পুরস্কার চালু করে। এছাড়া (গল্প/উপন্যাস) রাজীব নূর (সমকাল), কাব্যে (কবিতা/ছড়া) হাসান হাফিজ (আমার দেশ) পুরস্কার পেয়েছেন। আগামী ২৬ অক্টোবর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিবেন। বিজয়ীদের নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হবে।
বৃহস্পতিবার ডিআরইউ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ঢাকা হয়তো ইস্তাম্বুল, এথেন্স, বাগদাদ, রোম, লাহোর কিংবা দিল্লির মতো প্রাচীন নয়। কিন্তু ঢাকার পরতে পরতে নানা উপাখ্যান। কালের আবর্তনে ঢাকার আয়তন বাড়লেও বায়ান্ন বাজার তেপ্পান্ন গলির শহরের পরিচিতি আজো রয়ে গেছে। অলিগলির নামকরণ নিয়ে প্রচলিত আছে অনেক জনশ্রুতি, আবার কোনো কোনোটি সম্পর্কে রয়েছে সুস্পষ্ট ঐতিহাসিক তথ্য। নামের সঙ্গে অনেক এলাকার এখন আর কোনো মিল নেই। ‘আদি অন্তে ঢাকা’-এ ঢাকাকে নিয়ে আছে অজানা এক কাহিনি। ঢাকাকে জানুন। ঢাকাকে চিনুন। ঢাকাকে কতটুকু জানি? ঢাকাকে কতটুকু চিনি? ঢাকায় থাকতে হলে ঢাকাকে চিনতে হবে, জানতে হবে- এমনটা নয়। তবে ঢাকাকে নতুনভাবে চেনাতে জানাতে ‘আদি অন্তে ঢাকা’। এ নিয়ে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন বইটির লেখক। আদি অন্তে ঢাকা’র প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বইটি প্রকাশ করেছে অনিন্দ্য প্রকাশ।
এম মামুন হোসেনের পৈতিৃক ভিটে বিক্রমপুর (মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা) হলেও জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন পুরান ঢাকার ওয়ারিতে। তাই পুরান ঢাকার প্রতিটি অলিগলিতে রয়েছে তার শেকড়। উত্তরাধিকার সূত্রেই তার আগ্রহের বিষয় ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম মামুন হোসেন অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও এমবিএ করেছেন। ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে এসএসসি (২০০০) ও ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি (২০০২) পাস করেন। দেড় দশক ধরে সাংবাদিকতা করা এম মামুন হোসেন নানান বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পেয়েছেন স্বীকৃতি।
আরও পড়ুন: বিসিএস জটে পড়েছে পিএসসি
২০১৭ সালে ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে ‘নামকরণের ইতিকথা’ শিরোনামে পাঁচ পর্বের ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পেয়েছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড। ২০১৪ সালে ‘কী শিখছে শিশুরা’ শিরোনামে তিন পর্বের ধারাবাহিক শিক্ষা-বিষয়ক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পেয়েছেন ডিআরইউ- গ্রামীণফোন রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড। ২০১১ সালে ‘বেসরকারি ৩ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাস বিক্রি’ শিরোনামে অনুসন্ধানী শিক্ষাবিষয়ক প্রতিবেদনের জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান। এছাড়া জেন্ডার আইডেনটিটি নিয়ে মানবকি প্রতিবেদনের জন্য ইউএনডিপি অ্যাওয়ার্ড-২০১৪, কুষ্ঠ রোগ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রতিবেদনের জন্য ল্যাপ্রসি মিশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৪, প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য পেয়েছেন দ্যা ফ্রেড হলোস ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড। সাংবাদিকতায় তার আগ্রহের বিষয় হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ইতিহাস-ঐতিহ্য, গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ, মানবাধিকার, স্থানীয় সরকার ও সুশাসন।
ভারত, থাইল্যান্ড, দুবাই, তুরস্ক, ডেনমার্ক, সুইডেন-সহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া ডেনমার্কের অ্যালবর্গ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাকখাতে (২০১৫-২০২০) পেশাগত স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিয়ে গবেষণাকর্মে কাজ করেছেন। ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণাধর্মী বই 'আদি অন্তে ঢাকা' তার উল্লেখযোগ্য কাজের একটি। প্রকাশিত অন্যান্য বই হচ্ছে নিজের শব বহন (২০১৯), তুপা (২০২০), কালো জল (২০২১)