বিশেষ দিবস নয়, বাবার জন্য প্রতিদিনই ভালোবাসা
বাবা মানে নির্ভরতা, নিখাদ আশ্রয়। সন্তানের জন্য উত্তপ্ত সূর্যের তলে শীতল ছায়া। বাবা মানে ভরসা। তিনি শাশ্বত, বাবা চির আপন। এই বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তারপরও বিশেষ দিন হিসেবে প্রতি বছর ‘বিশ্ব বাবা দিবস’ পালিত হয়।
আজ ২১ জুন বিশ্ব বাবা দিবস। প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার দিবসটি পালন করা হয়। কোরআনে পিতা-মাতার সম্মান প্রসঙ্গে বলা আছে, তাদের সঙ্গে উহ! শব্দ পর্যন্ত করো না। হাদীসে আছে- রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পিতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহর অসন্তুষ্টি নিহিত।’
‘পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহী পরমং তপঃ, পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা’। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই মন্ত্র জপে বাবাকে স্বর্গজ্ঞান করে শ্রদ্ধা করেন। এর অর্থ পিতা স্বর্গ, পিতাই ধর্ম, পিতাই পরম তপস্যা। পিতাকে খুশি করলে দেবতা খুশি হন।
পিতা সন্তানের মাথার ওপর যেন বটবৃক্ষের ছায়ার মতো, যার স্নেহ শুধু ঝরতেই থাকে। শিশু সন্তানের কচি হাতটি বাবার হাতটি ধরে হাঁটতে থাকে তখন তাদের অটুট সম্পর্ক জানান দেয়। সন্তানের ভালোর জন্য জীবনের প্রায় সবকিছু ত্যাগ করতে হয় বাবাকে। আদর-শাসন আর বিশ্বস্ততার জায়গা বাবা। সন্তান বাবার ঋণ কখনো পরিমাপ করতে পারে না। সেই বাবার প্রতি সম্মান জানাতে আজ পালিত হচ্ছে বাবা দিবস।
মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- তা বোঝানোর জন্যই দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রে চালু হয়েছে এবং এর শুরু নিয়ে অনেক গল্প আছে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য গল্পটি হলো, ওয়াশিংটনের সোনোরা লুইস স্মার্ট নামের এক নারী দিবসটি উদযাপন শুরু করেন। ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মা মারা গেলে তার বাবা পরিবারটি বড় করে তোলেন।
১৯০৯ সালে সোনোরা গির্জার একটি বক্তব্যে তিনি মা দিবসের কথা জানতে পারেন। তখন তার ধারণা হয়, বাবার জন্যেও একটি দিবস থাকা উচিত। স্থানীয় কয়েকজন তার এই আইডিয়া গ্রহণ করেন। ধারণা করা হয়, ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথম বাবা দিবসটি পালন করা হয়।
পরে ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন সিদ্ধান্ত নেন, প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস পালন করা হবে। ছয় বছর পর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বিষয়টি আইনে পরিণত করেন।