১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯:১৬

বিনা বিচারে ৩০ বছর কারাভোগ করলেন মানসিক রোগী কানু মিয়া

৩০ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন কানু মিয়া (লাল বৃত্তে)  © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

বিনা বিচারে ৩০ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন মানসিক রোগী কানু মিয়া। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। ২০ বছর আগে তার মামলার কার্যক্রম স্থগিত হলেও এতদিন মুক্তি পাননি তিনি। 

পরিবার, কারাগার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  ১৯৯৫ সালের ২৫ মে মানসিক রোগী কানু মিয়া ঘরে থাকা একটি কোদাল দিয়ে তার মাকে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর গ্রামবাসী তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। মামলা চলাকালে কানু মিয়া আরও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২০০৩ সালের দিকে আদালত এক আদেশে বলেন, কানু মিয়া সুস্থ হওয়ার আগপর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। সেই থেকে কারাগারে আছেন কানু মিয়া। 

সম্প্রতি কানু মিয়ার বিনা বিচারে আটক থাকার বিষয়টি নজরে আসে হবিগঞ্জের জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিনের। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মাকে হত্যার অভিযোগে তিনি কারাগারে আছেন। কিন্তু তার মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত। এমনকি মামলার বাদীরও কোনো সন্ধান নেই। পরে কানু মিয়ার ভাই নাসু মিয়ার খোঁজ পান আব্বাছ উদ্দিন। পরে সবকিছু বিস্তারিত জেনে লিগ্যাল এইড থেকে এম এ মজিদ নামে এক আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লিগ্যাল এইড আইনজীবী এম এ মজিদ বলেন, ‘এটি অত্যন্ত অমানবিক। কোনো বিচার ছাড়া একজন মানুষকে ৩০ বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়। তাও আবার মানসিক রোগী। এটি কীভাবে একটি সভ্য সমাজে চিন্তা করা যেতে পারে?’

তিনি আরও বলেন, কানু মিয়া মুক্তি পাওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। একজন মানুষ ন্যায়বিচার পেয়েছেন। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে!