২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯

কর্মক্ষেত্রে নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখবেন যেভাবে

কর্মক্ষেত্রে নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখবেন যেভাবে  © সংগৃহীত

কর্মক্ষেত্রে মানসিক সুস্থতা একজন কর্মীর দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা এবং সামগ্রিক জীবনমানে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ কাজের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কর্মজীবনের পরিবেশ কেবল শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও সরাসরি প্রভাব ফেলে। যেহেতু জীবনের উল্লেখযোগ্য সময় কর্মক্ষেত্রে কাটে, তাই সেখানে একটি ইতিবাচক ও সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়ায়।

একটি সুস্থ কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার প্রাথমিক দায়িত্ব নিয়োগকর্তার হলেও ব্যক্তিগত পর্যায়েও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সচেতনতা জরুরি। একজন কর্মী কীভাবে নিজেকে প্রকাশ করছেন এবং সহকর্মীদের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হচ্ছেন, তা কর্মপরিবেশে বড় ভূমিকা রাখে।

স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ তৈরিতে প্রথমেই প্রয়োজন ব্যক্তিগত মানসিক সুস্থতার যত্ন নেওয়া। এজন্য কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন— নিজের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিন, কাজের মাঝে বিরতি নিন, অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে না পারলে স্পষ্টভাবে ‘না’ বলুন, যথেষ্ট ঘুম ও সুষম খাদ্য নিশ্চিত করুন, সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করুন।

পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখতে রুটিন তৈরি করাও সহায়ক হতে পারে। এতে মানসিক চাপ কমে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ে।

অন্যদিকে, একটি সহানুভূতিশীল ও পেশাদার পরিবেশ গড়ে তুলতেও কিছু মনোভাব ও আচরণ রপ্ত করা জরুরি। কাজ শুরু করুন ইতিবাচক উদ্দেশ্য নিয়ে। অনুমানের ভিত্তিতে কাজ এড়িয়ে চলুন, পেশাগত আচরণ বজায় রাখুন, গসিপ এড়িয়ে সহকর্মীদের উৎসাহ দিন, তাদের প্রতি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠুন এবং সময়ের মূল্য দিন। কারো কথা বলার সময় কথা না কাটা একটি সাধারণ শিষ্টাচার হলেও এর প্রভাব গভীর।

কর্মক্ষেত্রে মাইক্রোঅ্যাগ্রেশন অর্থাৎ অচেতন বা অনিচ্ছাকৃত আচরণ, মন্তব্য বা বার্তা যা সংখ্যালঘু বা প্রান্তিক গোষ্ঠীর কারো প্রতি নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে এক ভয়াবহ সমস্যায় রূপ নিতে পারে। এটি সরাসরি বৈষম্য না হলেও ছোট ছোট আচরণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই কর্মক্ষেত্রে একজন সহানুভূতিশীল শ্রোতা হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কেউ যদি মাইক্রোঅ্যাগ্রেশন সম্পর্কিত কোনো অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়, তবে তা হালকাভাবে না নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করা প্রয়োজন। রক্ষণাত্মক হয়ে ওঠার পরিবর্তে সহমর্মিতার সঙ্গে তার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া, কর্মপরিবেশকে আরও সহনশীল ও মানসিকভাবে নিরাপদ করে তুলতে সাহায্য করে।