‘শিক্ষার্থীদের মানসিক ভীতি দূর করতে শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে’
নানা অনিশ্চয়তার পাশ কাটিয়ে করোনার দীর্ঘ বন্ধের পর খুলেছে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ৫৪৩ দিন বন্ধ শেষে প্রথম দিনেই স্কুল কলেজগুলোতে শতকরা ৮০ শতাংশেরও অধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত হলেও অঞ্চলভেদে গ্রাম ও মফস্বলের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ছিলো একেবারেই কম।
তাই এই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অনেকে। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সহায়ক ভূমিকা শিক্ষকরা পালন করতে পারে বলে মনে করছেন ঢাকা কলেজের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও পরিচর্যা কমিটির আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক পুরঞ্জয় বিশ্বাস।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় করোনার প্রভাব, উত্তরণের উপায় ও চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে কথা বলেছেন।
করোনার এই দীর্ঘ বন্ধে মফস্বল কিংবা গ্রামের শিক্ষার্থীরা কি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক পুরঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, এই মুহূর্তেই শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে নিয়ে শ্রেণিবিন্যাস দাঁড় করানোর সুযোগ নেই। সারা দেশেই সমান গতিতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। তবে শহরকেন্দ্রিক যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রয়েছে তাতে শিক্ষার্থীরা অনেক ধরণের সুযোগ পায়। তাদের অবকাঠামোগত, অনলাইন ক্লাস পরীক্ষায় বিশেষ সুযোগ সুবিধা হয়তো রয়েছে। তবে গ্রামের শিক্ষার্থীরাও একেবারেই পিছিয়ে নেই।
তিনি আরও বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষার আওতায় এসেছে। করোনা আমাদের জন্য অপ্রত্যাশিত হলেও এই সময়টায় অনলাইন ক্লাসের সাথে সবাই যেভাবে পরিচিত হতে পেরেছে এটি আমাদের জন্য মন্দের ভালো একটি দিক হয়েছে। এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে কেউ যেন শিক্ষাবঞ্চিত না হয় সেটি চিন্তা করে শহর অঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই তাদের অনলাইন ক্লাস সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সুতরাং শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই কথাটি বলার সুযোগ নেই।
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন পরে শ্রেণিকক্ষে ফেরায় তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করানোর জন্য এই মুহূর্তে শিক্ষকরাই বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের শিক্ষক সমাজ শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল আছে এবং থাকবে। করোনাকালীন সময়ে ও শিক্ষকরা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছে। এখনও অনলাইন এবং অফলাইন উভয় পর্যায়েই শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে তাদের যে মানসিক দ্বিধা বা জড়তা রয়েছে সেগুলো কাটানোর জন্য শিক্ষকরাই ভূমিকা পালন করতে পারে।
এছাড়াও এই মুহূর্তে উদ্বিগ্ন না হয়ে ধীরে ধীরে আবারও স্বাভাবিক পরিবেশের সাথে শিক্ষার্থীদেরকে মানিয়ে নেয়ার জন্য সময় দিয়ে ও নিয়মিত কাউন্সিলিং করানো দরকার বলেও মনে করছেন তিনি।