আরও দশ বছর বাঁচলে ১০টি ভালো বই লিখতে চাই
- আবদুর রহমান
- প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২১, ০২:০১ AM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২১, ০২:০২ PM
দুই মেয়াদে টানা ৮ বছর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস। এদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ৮ বছর পূর্তিতে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক। অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদের উপাচার্যের মেয়াদান্তে এদিন (বৃহস্পতিবার) তাঁর কর্ম ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবদুর রহমান—
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: টানা ৮ বছর সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম।
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: শিক্ষা ও ক্যাম্পাসভিত্তিক গণমাধ্যম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের জন্য শুভকামনা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার পড়াশোনা এবং প্রথম কর্মজীবন কোথায় শুরু করেছেন?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানে বি.এ (অনার্স) এবং এম.এ (মাস্টার্স) ডিগ্রি অর্জন করি। এরপর ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করি। তারপর ১৯৮৩ সালে আমি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমনওয়েলথ স্কলারশিপের অধীনে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করি। ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করি। এরপর ১৯৮৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করি। তারপর ১৯৯২-৯৩ সালে কমনওয়েলথ একাডেমিক স্টাফ ফেলোশিপের অধীনে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমনওয়েলথ স্টাডিজ ইনস্টিটিউটে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা চালিয়েছি। আমি ১৯৯০ সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৯৫ সালে অধ্যাপক হিসিবে কর্মরত ছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯৪ সালে আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের Conflict Resolution ডিপ্লোমা অর্জনের জন্য সুইডিশ সরকারী বৃত্তির আওতায় সুইডেন যায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি জাতীয় বিশ্বাবদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করি। আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কাতার, জর্ডান সহ বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত বহু আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং সম্মেলনে অংশ নিয়েছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছোট বেলা থেকে আপনি বড় হয়ে কি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি তখন আমি চিন্তা করতাম বড় হয়ে গবেষক হবো এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করবো। আর কর্মজীবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হবো। আমি কখনো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) যোগ দেওয়া কিংবা সরকারের আমলা হওয়ার স্বপ্ন আমার কখনও ছিল না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনি লেখালেখি করতে পছন্দ করেন। এ বিষয়ে যদি কিছু বলতেন?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: হ্যাঁ। লেখালেখি হচ্ছে আমার ধর্ম। আমি গত ৮ বছর অর্থ্যাৎ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মত গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ১০টি বই লিখেছি। এই পর্যন্ত আমার নিজস্ব গবেষণায় পুস্তক বের হয়েছে ১৫টি আর সম্পাদিত গ্রন্থ রয়েছে ১টি। মহান মুক্তিযোদ্ধ সংশ্লিষ্ট যতগুলো ঘটনা ঘটেছে সকল কিছু স্থান পেয়েছে আমার ১০ খন্ডে রচিত মুক্তিযোদ্ধের জ্ঞানকোষ বইটিতে। আর এই বইটি আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে রচনা করেছি। কাজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন সময়ে আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো ১০টি বই এবং ১০ খন্ডে রচিত মুক্তিযোদ্ধের জ্ঞান কোষ রচনা করা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর আপনার প্রথম চ্যালেঞ্জ কি ছিলো?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিলো শিক্ষার্থীদের সেশনজট মু্ক্ত করা। কারণ আমি যোগদান করার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সমস্যাই ছিল সেশনজট। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী আড়াই থেকে ৩ বছর সেশনজটে আটকে থাকতো। আমি তখন এটাকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে কিভাবে সেশনজট মুক্ত করা যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করি এবং একটা উপায় ও উদ্ভাবন করতে সচেষ্ট হয়েছিলাম। এরপর আমি ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ নামে একটি একাডেমিক প্রোগ্রাম রচনা করি এবং সেই প্রোগ্রামটির রচনার মধ্য দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজট মু্ক্ত করতে সক্ষম হই। যদিও করোনার কারণে কয়েকটা মাস আমাদের শিক্ষার্থীদের কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। তবে পুনরায় খোলার পর নূন্যতম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা এবং রেজাল্ট দিয়ে তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর কি ধরনের সমস্যা আপনার নজরে আসে?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি দেখলাম যে এটাকে সবাই শুধুমাত্র একটা শিক্ষাবোর্ড ভাবতো। এটাকে কেউ বিশ্ববিদ্যালয় ভাবতো না। কিন্তু আজ আমরা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান উন্নয়ন, সেশনজট মুক্ত করা এবং শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণসহ নানা উন্নয়ন মূলক কাজের মধ্য দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে সকল মহলে পরিচিতি লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নীতিবাচক ইমেজ ছিল সেটা আজ ইতিবাচক ইমেজে রূপ নিয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরপর কোন ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা চোখে পড়েছিল? এসব সমাধানে কি উদ্যোগ নিয়েছেন?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকরা বিভিন্ন সমস্যার জন্য আগে গাজীপুর ক্যাম্পাসে আসতে হতো। তারজন্য এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে যেতে হতো হয়রানির শিকারও হতে হতো এবং টাকার লেনদেন ছাড়া কাজটি করতেও পারতো না। কিন্তু আমি আসার পর এখন আর কাউকে গাজীপুর ক্যাম্পাসে আসতে হয় না। আর এখন ৯৫% কাজ আমরা অনলাইনে করে থাকি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তারা তাদের কাজগুলো অনলাইনে করতে পারে। এছাড়াও আগে নিয়োগ বাণিজ্য ছিল আমি সেটিও বন্ধ করেছি। আমার সময়ে মেধারভিত্তিতে প্রিলি, লিখিত ভাইভা পরীক্ষা দিয়ে ৪৭৩ জন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে। তাদের কাউকে এককাপ চা পর্যন্ত খাওয়াতে হয়নি। এছাড়াও নানান অনিয়মে আমি ‘দুষ্টের দমন সৃষ্টের পালন’ নীতি অনুসরণ করে দুর্নীতির প্রমাণের ভিত্তিতে কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছি। তাদের মধ্যে একজন এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার; একজন কলেজ ইন্সপেক্টর এবং একজন নৈশপ্রহরীও ছিলেন। আর সাময়িক বরখাস্ত করেছি বেশ কয়েকজনকে। অন্যায়ের সাথে আমি কখনো আপোষ করিনি। এছাড়াও অধিভুক্ত কলেজগুলো এবং মূল ক্যাম্পাসের দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য একটি ‘দুর্নীতি সেল’ গঠন করেছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: র্দীঘ ৮ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কি কি উন্নয়ন হয়েছে?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: আমি ২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করি বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। এছাড়াও ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রথম শিক্ষা সমাবেশের আয়োজন করি। যেখানে ২ হাজার কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়গণ উপস্থিত ছিল। গাজীপুর ক্যাম্পাসে আবাসন ব্যবস্থা ছিল না। আগে সন্ধ্যার পর মনে হতো ভূতের বাড়ী। এখন সেখানে মানুষ বসবাসের জন্য উপযোগী করে তুলেছি। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ১০ তলার ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছি যার ৬ তলার কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থাকবে। এছাড়াও গাজীপুর ক্যাম্পাসের পাশে আরও ১৫ একর জায়গা নিবো। যেখানে ভিসি আর প্রো-ভিসির থাকার ব্যবস্থা, খেলার মাঠ এবং একাডেমিক ভবনসহ যা প্রয়োজন ভবিৎষতে তৈরি করা হবে। আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সিনেট ভবন ছিল না। এখন ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেছি যার ৩ তলার কাজ শেষ হয়েছে। এই ছাড়াও আইসিটি ভবন নির্মাণ করেছি ৭ তলা বিশিষ্ট। আমাদের শিক্ষকদের যারা প্রশিক্ষণ নিতে আসে তাদের জন্য থ্রিস্টার হোটেলের মত একটা ১৪ তলা ফাউন্ডেশন ভবনের ১০ তলা নির্মাণ করা হবে যার ২ তলার কাজ শেষ হয়েছে ৩ তলার কাজ চলছে। যেখানে একসাথে ৪০০ শিক্ষক থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তুক রচনার একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যেখানে আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সম্মান্নিত অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলীদের সহযোগীতায় টেক্সবুক তৈরি করবো। যা অত্যান্ত সুলভ মূল্যে দেশের অধীভুক্ত সকল কলেজ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবো। ২০১৩ সালে আমি যখন প্রথম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিজস্ব পতাকাও ছিল না। সেটাও আমি তৈরি করেছি। করোনাকালীন সময়ে সরকার আমাদের রিজার্ভ ফান্ড থেকে ১ হাজার কোটি টাকা চায়, আমরা সরকারকে এই পর্যন্ত ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছি। যেখানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সরকার থেকে নিয়েছে। সব মিলিয়ে র্দীঘ ৮ বছরের আমি অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছি আর এইগুলো বাস্তবায়ণ করতে আমাকে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ অনেকে সাহায্য করেছে। আর এজন্যই এখন অনেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে চায়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অবসর সময়ে কি করেন?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: এতো কাজ করার মাঝে আসলে আর অবসর সময় আর থাকে না। তারপর কাজের মধ্যে যে সময় পেতাম অর্থ্যাৎ ঢাকা থেকে গাজীপুর যেতে আসতে যে সময় পেতাম তখন আমি বই লেখা এবং পড়ার কাজে ব্যয় করতাম। করোনার এই ১১ মাস আমাকে গাজীপুর ক্যাম্পাসে যেতে হয়নি। এসময়ে আমি ঢাকায় অফিস করতাম আর সেই সুবাধে এই বছর আমার ৫টা বই প্রকাশ পেয়েছে যার ১টি ইংরেজি এবং ৪টি বাংলায় রচিত হয়েছে। বইগুলো গবেষণামূলক বই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: আমি যদি আর ১০টা বছর বেঁচে থাকি তাহলে এই দশ বছরে ১০টি ভালো বই লিখতে চাই। আর গবেষণার কাজে আত্ননিয়োগ করতে চাই। পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।
সংক্ষিপ্ত পরিচয়
২০১৩ সালে মার্চ মাসে চার বছরের জন্য প্রথমবার উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন এই অধ্যাপক। এরপর ২০১৭ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসির দায়িত্ব পান তিনি। অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ১৯৫৪ সালের ২৭ অক্টোবর পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার আইরন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) ও এম এ উভয় পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকার করে ১৯৮৩ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এছাড়া তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের রিউকোকু বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন।
১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে তার শিক্ষকতা পেশা শুরু করেন তিনি। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন তিনি। ৪২ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৩ বার নির্বাচিত ডিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (২০০৯-২০১২), বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি, অধ্যাপক শামসুল হক শিক্ষা কমিটির সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি অবসরে যান।