ভর্তি পরীক্ষাকে অগ্নিপরীক্ষা না ভেবে কলেজের পরীক্ষার মত ভাবুন
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম (সি ইউনিট) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দ্বিতীয় (খ ইউনিট) হয়েছেন নুরুন নাহার ঊর্মি। শিক্ষাজীবনে পঞ্চম শ্রেণি থেকে সকল বোর্ড পরীক্ষাতেই পেয়েছেন জিপিএ-৫। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পড়াশোনা নিয়ে দ্যা ডেইলি ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইলিয়াস শান্ত—
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় চান্স পাওয়ার জন্য আপনি কীভাবে পড়েছেন, দৈনন্দিন রুটিন কী ছিল?
নুরুন নাহার ঊর্মি: রুটিন খবই সহজ-সরল। খাওয়া, ঘুম এবং পড়া।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এবারও ঢাবিতে এমসিকিউ-এর সঙ্গে লিখিতও পরীক্ষা নেবে। এতে ভালো করার উপায় কি?
নুরুন নাহার ঊর্মি: লিখিত পরীক্ষার জন্য টেক্সবুক খবুই গুরুত্বপূর্ণ। গল্প-কবিতার অনুচ্ছেদগুলো খুব ভালোভাবে পড়া থাকলে এবং সার্বিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান পড়া থাকলে লিখিত পরীক্ষায় কোন সমস্যা হওয়ার কথা না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার কোনো সহজ টেকনিক আছে?
নুরুন নাহার ঊর্মি: দৈনিক কমপক্ষে ৪-৫ ঘন্টা মনোযোগ দিয়ে পড়লে সবারই ভালো করা সম্ভব। যতক্ষণই আপনি পড়ুন না কেনো attention and focus are the keys to success.
দেখুন: জাবিতে প্রথম, ঢাবিতে দ্বিতীয় ঊর্মি
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কোচিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ? যাদের কোচিং করার সুযোগ নেই তারা কীভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে?
নুরুন নাহার ঊর্মি: কোচিং গুরুত্বপূর্ণ নয়- কথাটা বললে তা মিথ্যা হবে। কোচিং আপনাকে গাইডলাইন দেয়, প্রস্তুতির প্রাতিষ্ঠানিক একটা পরিবেশ দেয়। তবে যারা কোচিং করতে পারছেন না তাদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই। টেক্স বই এবং সাধারণ জ্ঞানের জন্য কিছু বই পড়ে আপনি ভালো এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারবেন। ফোকাসটা ধরে রাখতে হবে। যতটুকু পড়েন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: গাইড বই নাকি টেক্সট বই- কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
নুরুন নাহার ঊর্মি: অবশ্যই টেক্সবই। টেক্সবইয়ের কোন বিকল্প নেই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যারা একই সাথে একাধিক ইউনিটের প্রস্তুতি নেয়, তাদের জন্য পরামর্শ কি?
নুরুন নাহার ঊর্মি: আমি মানবিক শাখার এবং শুধুমাত্র বি ইউনিটের জন্যই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তাই এ বিষয়ে বেশি কিছু বলা আমার উচিৎ হবে না। তবে যেহেতু বি ইউনিট এবং ডি ইউনিটের প্রশ্নপত্র, মানবন্টন এবং প্রস্তুতি অনুরুপ হয়, সেহেতু কোনো ঝুঁকি না নিয়ে চতুর হওয়া উচিৎ। ২টার জন্য পড়তে গিয়ে যেন এমন না হয় যে কোনটাই হলো না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণকালে সাধারণত কোন ভুলগুলো শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দেয়?
নুরুন নাহার ঊর্মি: প্রথমত, পরীক্ষার্থী নিজেদের শক্তি এবং দুর্বলতা না দেখে বড় ভাই, কোচিং পূর্ববর্তী বছরের ভর্তি পরীক্ষায় সফলদের পরামর্শ খুঁজে সময় নষ্ট করে। দ্বিতীয়ত, পরীক্ষার্থীরা হয় বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়ে, না হয় হতাশাগ্রস্ত। দুইটা দিকই খারাপ। তৃতীয়ত, মনযোগ কম থাকে অনেকের।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পরীক্ষা চলাকালীন ১ ঘন্টা/দেড় ঘন্টায় কোন ভুল করা উচিত নয়
নুরুন নাহার ঊর্মি: পরীক্ষার চলাকালীন ১ ঘন্টা/দেড় ঘন্টায় কোন ভুল করা যাবে না। বিশেষ করে উত্তেজিত হওয়া, ভয় পাওয়া, রোল-রেজিস্ট্রেশন পূরণের সময় মনোযোগ না দেয়া এসব। এসব এড়িয়ে স্বাভাবিক এবং মনযোগী হতে হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: প্রথমবার যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে তাদের মাঝে ভয় বেশি কাজ করে এবং এর ফলে অনেকেই ব্যর্থ হয়। এই ভয় দূর করার ক্ষেত্রে করণীয় কি?
নুরুন নাহার ঊর্মি: এই ভয় দূর করার একমাত্র উপায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা। ভর্তি পরীক্ষাকে জীবনের অগ্নিপরীক্ষা না ভেবে কলেজের যেকোন পরীক্ষার মতো ভাবা। কিন্তু কোনভাবেই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করা যাবে না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে।
নুরুন নাহার ঊর্মি: আপনাকেও ধন্যবাদ।