প্রশ্নোত্তরে মাহে রমজান, প্রথম পর্ব

  © টিডিসি ফটো

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম রোজা অতিবাহিত হয়েছে। একজন রোজাদারের সিয়াম সাধনাকে আরও সুন্দর ও পরিপূর্ণ করতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে আপনার মনে জাগ্রত হওয়া রমজান নিয়ে নানা প্রশ্নের সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত মাওলানা সালাউদ্দিন সাহেব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আবদুর রহমান

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: রমজান সর্ম্পকে সংক্ষেপে বলুন?

মাওলানা সালাউদ্দিন: আলহামদুলিল্লাহ। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসুলিল্লাহ। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। রমজান শব্দটি কোরআনের শব্দ। এর আরেক নাম সিয়াম। আমাদের দেশে আমরা রোযা বলি। রমযান শব্দের আভিধানিক অর্থ জালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়া। শারীরিক ও আধ্যাত্মিক বিশুদ্ধতা অর্জন, মাদক ও অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন থেকে দূরে থাকার মাধ্যম। রোজা রাখার দ্বারা আল্লাহ বান্দার গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দেন। পারিভাষিকভাবে রমযান হলো সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বান্দাহ খাবার পানীয় এবং স্ত্রী সহবাস হতে বিরত থাকা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: রমজান কখন শুরু হয়?

মাওলানা সালাউদ্দিন: রোযা দ্বিতীয় হিজরীতে ফরয হয় (সুরা বাকারার‌‌ ১৮৩ নাম্বার আয়াত দ্বারা)। তবে এখন রমজান মাসের শুরু ও শেষ নির্ভর করে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে চাঁদ দেখার ওপর।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এমন কোন ব্যক্তি যদি রমজানের চাঁদ বা ঈদের চাঁদ দেখে যার সাক্ষ্য মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য নয় তাহলে তার বিধান কি?

মাওলানা সালাউদ্দিন: এইক্ষেত্রে সে রোজা রাখবে এবং যদি ঈদের চাঁদ হয় তাহলে সেই অন্যদের সাথে মিল রেখে ঈদ পালন করবে একাকী নয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, হযরত নবী করিম (স.) এর নিকট এক বেদুঈন এসে বললো আমি চাঁদ অর্থাৎ রমজানের চাঁদ দেখেছি। হুজুর তাকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি কি এই সাক্ষ্য দাও যে আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই? সে বললো হ্যাঁ। পুনরায় হুজুর জানতে চাইলেন তুমি কি সাক্ষ্য দাও; মোহাম্মদ আল্লাহর রাসুল? সে বললো হ্যাঁ। হুজুর বললেন হে বেলাল! লোকদের মধ্যে ঘোষণা করে দাও তারা যেন(কাল) রোজা রাখে।(আবু দাউদ, তিরমিজী, ইবনে মাজা)। এ হাদিস থেকে প্রমাণিত যে, একজন দ্বীনদারেরসাক্ষ্য প্রমাণ করে দেবে রোজার চাঁদকে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: রমজানে মুসলিমরা কেন উপবাস থাকেন?

মাওলানা সালাউদ্দিন: শুধুু মুসলিমরা নয় পৃথিবীর অনেক জাতিই উপবাস থাকে। মুসলিমরা কেন থাকে সেইটা বলতে গেলে। প্রথমত. এটি মহান আল্লাহর হুকুম। রাসূল সা: এর নির্দেশ। দ্বিতীয়. মেডিকেল সাইন্স কর্তৃক রোযার অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। ৩য়- আত্ব:শুদ্বি অর্জন করা যায়। ৪র্থ. পরকালে নাজাতের মাধ্যম।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: রমজানের রোজা রাখার জন্য কতজন ব্যক্তির চাঁদ দেখা শর্ত?

মাওলানা সালাউদ্দিন: চাঁদ দেখার ব্যাপারে এমন এক ব্যক্তির স্বাক্ষ্য গ্রহণযোগ্যযে আকেল, বালেগ, আদেল এবং মুসলমান। চাই সে আজাদ, গোলাম, নারী, পুরুষ যাই হোক। এই বিধান হলো রমজানের চাঁদের ক্ষেত্রে। কিন্তু ঈদের চাঁদ দেখার বিধান হলো দু’জন আকেল, বালেগ, আদেল পুরুষের স্বাক্ষী হওয়া। যদি একজন দ্বীনদার পুরুষ এবং দু’জন দ্বীনদার নারী স্বাক্ষ্য দেন, তবে শর্ত আদায় হয়ে যাবে। অন্যতায় ঈদের চাঁদ প্রমানিত হবে না। যদি একজন দ্বীনদার পুরুষ কিংবা পুরুষ ব্যতীত চারজন দ্বীনদার নারী ঈদের চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দেন, তবে তা গ্রহণযোগ্য হবে না (ফতোয়ায়ে আলমগিরী, প্রথম খণ্ড/ বেহেশতী জেওর, তৃতীয় খণ্ড)। যে লোক ইসলামী বিধান মান্য করে চলে না, অনবরত শরিয়তের খেলাফ কাজ করে, নামাজ পড়ে না, রোজা রাখে না, মিথ্যা বলে, ঘুষ-সুদের সাথে জড়িত অর্থাৎ ইসলাম বিরোধী কাজের সাথে সম্পর্কিত, তার স্বাক্ষী ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

মাওলানা সালাউদ্দিন: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে ধন্যবাদ।


সর্বশেষ সংবাদ