ডাকসু নেতাদের মন আরও বড় হতে হবে
- মোতাহের হোসেন, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:৩৪ PM , আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০৮:৫৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মন বড় করে দলীয় পরিচয় ভুলে শিক্ষার্থীদের অধিকারে কাজ করতে আহবান জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার মাহ্সা ইউনিভার্সিটির সদ্য নির্বাচিত ভিপি বশির ইবনে জাফর। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। রবিবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ আহবান জানান। সাক্ষাৎকারে নিয়েছেন মোতাহের হোসেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভিপি হওয়ার পিছনে গল্পটা আসলে কি?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: শুরু থেকেই সেখানে আমার চারিত্রিক গুণাবলী দিয়ে একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছিলাম। সেই থেকে তারা আমাকে হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করেছে। এই কারণে আমি মাহ্সা ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র সংসদে বহির্বিশ্বের অন্য একটি দেশ থেকে গিয়েও সবাইকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিক্ষার্থীরা আপনাকে কতটুকু গ্রহণ করেছে?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: আমি নির্বাচন করবো সেই কেন্দ্রিক আসলে তাদের সাথে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠেনি। আমি সবসময় ভেবেছি তারা যেন আমাকে পর না ভাবে। তারা যেন আমাকে আপনভাবে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে। আমি অন্য দেশ থেকে এসেছি এটা যেন তারা না ভাবে। তারা আমাকে ভালোবাসার মানুষ হিসেবে গ্রহণ করেছে। এই ভালোবাসাই আমাকে নির্বাচনে বিজয় করেছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বাংলাদেশের ডাকসু নির্বাচনে আপনার প্রতিক্রিয়া কি?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: সারাবিশ্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। এখানেও তাই হয়েছে। তবে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে যা আপনারা বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখেছেন। যা সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে। তবে আমার মনে হয়, এখানে যে রাজনৈতিক প্রভাব চলে আসছে সেই রাজনৈতিক প্রভাব যদি না থাকতো তাহলে আরো বেশি ভালো হতো। রাজনৈতিক প্রভাব যদি এখানে টোটাল ডিসকানেক্ট করা যায়, তাহলে আমার মনে হয় ক্যাম্পাসের রাজনীতি বা ছাত্র সংসদের রাজনীতি সুন্দর সুস্থ্য এবং ক্লিন হবে।
এটা আমার প্রত্যাশা ছিল যেটা এখানে হয়নি। তবে ভবিষ্যতে যদি এটি নজর দেয়া হয় তাহলে আমার মনে হয় এই নির্বাচন আরও সুন্দর এবং ক্লিন হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আমরা জানি যে আপনি আগে ইসলামী শাসনতন্ত্র করতেন। ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী শাসনতন্ত্র অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু তারা যেকোনো কারণে হেরে গিয়েছে। আসলে কি তাদের মধ্যে ত্রুটি ছিলো যার কারণে তারা হেরে গেছে বলে আপনি মনে করেন।
ভিপি বশির ইবনে জাফর: সারা বিশ্বের মানুষ তাকে গ্রহণ করবে যে ক্লীন ইমেজের অধিকারী। তার মধ্যে অবশ্যই চারিত্রিক এবং মেধা সম্পন্ন হতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী শাসনতন্ত্র অবশ্যই একটি মেধার কাঠ-খড় পুড়িয়ে তারা এখানে এসেছে। আমি মনে করি, ইসলামী শাসনতন্ত্র ক্লিন ইমেজের দিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ। তবে যদি দলীয় রাজনীতিমুক্ত নির্বাচন হয়, সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে অবশ্যই অবশ্যই ইসলামী শাসনতন্ত্র এই নির্বাচনে জয়ী হবে এবং ভালো একটি অবস্থানে থাকবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যেসব শিক্ষার্থীরা এ দেশ থেকে স্কলারশিপ নিয়ে মালয়েশিয়ায় যেতে চায় তাদের জন্য আপনি কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: স্কলারশিপের সুযোগ সবার জন্য আছে তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত এক বছরে আমি অনেককে স্কলারশিপ দিয়েছি। যারা আমার কাছে গেছে তাদেরকে আমি সাহায্য করতে চেষ্টা করেছি এবং ভবিষ্যতেও এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতেও এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকি। যদি কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করতে চায় তাহলে আমি অবশ্যই রেসপন্স করব।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাহ্সা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভিত্তিক কোন ধরনের অসঙ্গতি আছে কিনা?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: এখানে ছাত্র সংখ্যা অনেক বেশি আমার কাছে সর্বত্রই একটি উৎসব উৎসব আমেজ মনে হচ্ছে। ছাত্র সংখ্যা কম থাকলে একটু মনমরা ভাব চলে আসে। বিশ্ববিদ্যালয় সবদিক থেকে শ্রেষ্ঠ হওয়া উচিত। তবে আমি সব সময় গুরুত্ব দিতে চাই পরিবেশগত অবস্থা। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি এদিক দিয়ে একটু দৃষ্টি দেয় তাহলে আমার মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিবেশগত ভাবে অবস্থা আরো ভালো হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ডাকসু নিয়ে আপনাদের কোন পরামর্শ আছে কিনা?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: ডাকসুতে ক্ষমতাকেন্দ্রিক যে দ্বন্দ্ব ছিল তার মধ্যে একজন ডাকসুর ভিপি হয়েছে। আমার মনে হয় ভিপি হয়ে যাওয়ার পরে এখন যে দলাদলি রেষারেষি চলছে এটা না হওয়া উচিত এবং সবাই হৃদয় থেকে মনটাকে প্রশস্ত করে দলীয় পরিচয় ভুলে শিক্ষার্থীদের অধিকারে কাজ করা উচিত। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মুক্তভাবে যদি ডাকসুতে কাজ করা যায় তাহলে আমার মনে হয় ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করা যাবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস:মালয়েশিয়াতে ছাত্র রাজনীতিতে দলীয় প্রভাব আছে কিনা?
ভিপি বশির ইবনে জাফর: মালয়েশিয়ার ছাত্র রাজনীতির দলীয় আনা যাবে না এটা আইনে নিষিদ্ধ। যার কারণে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকে
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে ধন্যবাদ।
ভিপি বশির ইবনে জাফর: আপনাকেও ধন্যবাদ