আইইউবিএটি শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজারোপযোগী করে গড়ে তোলা হয়
দেশের প্রথম অন্যতম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সাবেক পরিচালক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান ১৯৯১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। রাজধানীর উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে ১৯ বিঘা জায়গার উপর নির্মিত আইইউবিএটির দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস যে কারো নজর কাড়বে। আইইউবিএটি দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থীদের ডেফাল্ট পেমেন্টের মাধ্যমে পড়ালেখার সুযোগ করে দিচ্ছে ।
বিশ্ববিদ্যালয়টি পাঠ্য পুস্তকের পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষার উপরও সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য এখানে রয়েছে বেশিকিছু ল্যাব। শুধু লেখাপড়াই নয় এখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশের জন্য রয়েছে ইনডোর এবং আউটডোর খেলাধুলার ব্যবস্থা। রয়েছে বাস্কেটবল এবং ফুটবল গ্রাউন্ড।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে কর্মরত আছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড.আবদুর রব। এর আগে তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমসহ বেসরকারি খাতের উচ্চশিক্ষার সার্বিক বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস এর সঙ্গে কথা বলেছেন অধ্যাপক আবদুর রব। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিহাব উদ্দিন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আইইউবিএটি শিক্ষার্থীদের কোন বিষয়টি সবার থেকে আলাদা?
অধ্যাপক আবদুর রব: আমাদের সমাজে প্রচলিত একটা প্রবাদ আছে ‘আগে দর্শনদারী পরে গুনবিচারী’ আপনি যেখানে যাবেন সেখান প্রথমে আপনার বাহিরের দিকটি মানে আপনার পোশাক নিয়ে কথা বলবে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা এখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পরিপাটী হয়ে চলার পরামর্শ দেই। ফর্মাল পোশাক ছাড়া আমরা ক্যাম্পাসে কাউকে ঢোকার অনুমতি দেই না। শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে আসতে হলে তাকে ফর্মাল পোশাকে আসতে হবে। আর এটিই আমাদের শিক্ষার্থীদের সবার থেকে আলাদা করেছে। এমন দৃশ্য আপনি অন্য কোন ক্যাম্পাসে পাবেন না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ব্যবহারিক শিক্ষায় আপনারা কেমন গুরুত্ব দিয়ে থাকেন?
অধ্যাপক আবদুর রব: ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য আমাদের এখানে রয়েছে মান সম্পন্ন ল্যাব। ল্যাবগুলোতে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসের পড়ার ব্যবহারিক প্রয়োগ করে থাকে। এছাড়া আমরা প্রতি সেমিস্টারেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠাই। এরফলে তারা বাইরের পরিবেশ সম্পর্কে বুঝতে পারে। কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সেটি তারা জানতে পারে। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কম্পিটিশনের আয়োজন করে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে আমরা অনেক ধরনের সেমিনার এবং কনফারেন্সের আয়োজন করে থাকি। এগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখতে পারে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য হল গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি। গবেষণায় আপনারা কেমন গুরুত্ব দিয়ে থাকেন?
অধ্যাপক আবদুর রব: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি গবেষণার সুযোগ কিংবা সংস্কৃতি না থাকে তাহলে সেই বিশ্ববিদ্যালয় কখনোই নতুন জ্ঞান তৈরি করতে পারে না। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের নতুন কিছু শেখানো কোনভাবেই সম্ভব না। আমাদের এখানে একটি রিসার্চ সেন্টার রয়েছে।এখানে ছাত্র-শিক্ষক যে কেউ গবেষণা করতে পারে। গবেষণায় আরও আগ্রহী করে তুলতে আমরা গবেষকদের সফল গবেষণার জন্য আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করে থাকি। আমরা শিক্ষকদের বলি আপনাদের গবেষণাপত্র আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। আমরা সেটি যাচাই করে দেখি এরপরে তার গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেই। গবেষণার মাধ্যমে যারা ভালো করেন তাদেরকে প্রমোশনের ব্যবস্থাও করে থাকি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: চাকরির বাজারে কেমন করছে আপনাদের গ্রাজুয়েটরা?
অধ্যাপক আবদুর রব: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমপ্লয়মেন্ট অরিয়েন্টেড হিসেবে গড়ে তোলা হয়। তাকে আমরা তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাও দিয়ে থাকি। বাস্তব কাজের পরিবেশ দেখানোর জন্য আমরা তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করি। সেখানে তারা কিভাবে কাজ করতে হয় তা শিখতে পারে। এছাড়াও আমরা এখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদরে চাকরি পেতে সহযোগিতা করে থাকি। আমাদের এখানে প্রত্যেক মাসেই একটা দুইটা করে প্রতিষ্ঠান আসে। তারা এখানকার ছাত্রদের লিখিত এবং ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরি দিয়ে থাকে। ফলে একজন শিক্ষার্থী ছাত্র থাকা অবস্থায় চাকরি পেয়ে যায়। আমরা এখানে চাকরি মেলারও আয়োজন করে থাকি। এই বিষয়গুলোর জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের চাকরি পেতে খুব একটা সমস্যা হয় না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে আইইউবিএটি কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে?
অধ্যাপক আবদুর রব: একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অনেকাংশেই নির্ভর করে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর। তাই আমরা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ধাপ অনুসরণ করে থাকি। আমরা প্রথমে দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি। এরপর যারা আবেদন করেন তাদের আমরা একটি লিখিত পরীক্ষা নেই। লিখিত পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হন তাদের আমরা মৌখিক পরীক্ষা নেই। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আমরা ডেমো ক্লাস দিতে বলি। ডেমো ক্লাসের মাধ্যমে আসলে সেই শিক্ষক কতটা পারদর্শী সেটি সামনে চলে আসে। এর পরে তাদেরকে নিয়োগ দিয়ে থাকি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাদের ট্রান্সপোর্ট সুবিধা নিয়ে আমাদের কিছু বলুন...
অধ্যাপক আবদুর রব: ঢাকার মধ্যে যাতায়াত অন্যতম সমস্যা। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য। যাতায়াতের জন্য অনেক শিক্ষার্থী ঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। মেয়েদের নিরাপত্তা এবং ক্লাস এই দু’টি বিষয় মাথায় রেখে আমরা বাস সার্ভিস চালু করি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য ঢাকার বাইরে থেকেও শিক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু আছে।নারায়ণগঞ্জ, সাভারসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে পৌঁছে দেয়া এবং নিয়ে আসার কাজ করে এর সাথে সংশ্লিষ্টরা। এরফলে অভিভাবকরাও অনেকটা নিশ্চিন্তে থাকে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আমাদের ৪০টি বাস রয়েছে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাদের ক্যাম্পাসে প্রায় সময়ই নাটক কিংবা ছবির শুটিং হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোন সমস্যা হয় কিনা?
অধ্যাপক আবদুর রব: আমাদের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে অনেকেই মুগ্ধ। আর এই মুগ্ধতা থেকেই আমাদের এখানে শুটিং করতে আসে। শুটিংয়ের কারণে আমাদের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে কোন প্রকার সমস্যা হয় না। আমাদের ক্যাম্পাসের পেছনে যে খোলা জায়গা রয়েছে সেখানে শুটিং হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাঝে মাঝে শুটিং নিয়ে অনেক আগ্রহ দেখা যায়। ভবিষ্যতে এটি তাদের ফিল্ম মেকার হতে অনুপ্রাণিত করবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এতক্ষণ মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
অধ্যাপক আবদুর রব: আপনাকেও ধন্যবাদ।