বিসিএস ছেড়ে মানবাধিকার কর্মী নিশাত সুলতানা
নিশাত সুলতানা পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। কর্মজীবনের শুরু ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে। পরবর্তীতে যুক্ত হন বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সাথে। তিনি একজন কলামিস্ট, শিশুসাহিত্যিক ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি কাজ করেছেন কনসার্ন ইউনিভার্সেল ও সেভ দ্য চিলড্রেনের গুরুত্বপূর্ণ পদে। বর্তমানে কর্মরত আছেন উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে।
২৭তম বিসিএসে যোগদান করে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। তার রচিত শিশুতোষ বইগুলোর মধ্যে ‘নিপুর রঙিন একদিন’, ‘সবার বন্ধু পিকু’ ও ‘ক্রিকেট পাগল গেছো ভূতের বাচ্চা’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সাথেও জড়িত তিনি। তার বর্ণাঢ্য, সৃষ্টিশীল জীবনের গল্প নিচে তুলে ধরা হলো—
প্রশ্ন: কেমন কেটেছে আপনার শৈশব ও কৈশোর?
নিশাত সুলতানা: আমার জন্ম উত্তরবঙ্গের নওগাঁ জেলায়। শৈশব ও কৈশোরের প্রায় পুরোটা সময়ই কেটেছে নওগাঁ জেলা শহরে। বাবার চাকরিসূত্রে মাঝখানে প্রায় চার বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কাটিয়েছি। আমার মা-ও চাকরি করতেন, পেশায় শিক্ষক ছিলেন। আমরা দু’বোন; আমি ছোট। তাই আদরটা একটু বেশিই পেতাম। তবে বাবা-মা ছিলেন প্রচণ্ড বাস্তববাদী। অন্যায় আবদার তারা কখনো প্রশ্রয় দেননি। আমাদের দু’বোনকেই বাস্তব জীবনের বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে শিখিয়েছিলেন। দুটি কন্যাসন্তান হওয়ার পর পুত্রসন্তান লাভের সামাজিক চাপ তারা আত্মবিশ্বাসের সাথেই মোকাবিলা করেছেন। তারা চেয়েছিলেন আমরা যেন সুশিক্ষিত আর আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠি। আমার বড় বোন নাহিদ সুলতানা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিলেন। তার ছোটবোন হিসেবে ভালো ফলাফল করার একটা চাপ স্কুলের প্রথম দিন থেকেই অনুভব করেছি; যেটি অব্যাহত ছিল আমার পুরো শিক্ষাজীবন। মা অসম্ভব পরিশ্রমী আর সংস্কৃতিমনা ছিলেন। তিনি আমাদের দু’বোনকে পড়াতেন। আমাদের গান, নাচের হাতেখড়ি তার কাছে। মনে পড়ে, প্রতি বছর স্কুলে বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণীর দিন একগাদা পুরস্কার মায়ের হাতে তুলে দিতাম আমরা। শিশু একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, একুশে পরিষদ ও আবৃত্তি পরিষদে নিয়মিত যাতায়াত ছিল আমাদের। ১৯৯৯ সালে রবীন্দ্রসংগীতের জন্য বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হই। খুব বেশি খেলাধুলা করার সুযোগ পাইনি। তবে কুমির-কুমির, বরফ-পানি, চোর-ডাকাত-দারোগা-পুলিশ, ওপেনটি বায়োস্কোপ, লুডু, নাম-দেশ-ফল-ফুল খেলতাম বন্ধু কিংবা খালাতো-মামাতো ভাই-বোনদের কাছে পেলেই।
প্রশ্ন: শিক্ষা জীবনের গল্প শুনতে চাই। পড়াশোনায় কোন প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?
নিশাত সুলতানা: পড়াশোনায় বরাবরই ভালো ছিলাম। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হই নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েই জন্ডিসে আক্রান্ত হই। বেশ কিছুদিন আমাকে হাসপাতালে থাকতে হয়। ষষ্ঠ শ্রেণির প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিতে পারিনি। কিছুটা থমকে যাই। এরপর অষ্টম শ্রেণিতে আরেকবার জন্ডিস হয়। দু’বার জন্ডিসে লেখাপড়া বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্বাস্থ্য বিবেচনা করে মা-বাবাও পড়ার জন্য বেশি চাপ দিতেন না। দিন দিন পিছিয়ে পড়তে থাকি। শিক্ষকদের ভয়ে শ্রেণিকক্ষে শেষ বেঞ্চে বসা শুরু করি। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির শেষদিকে হঠাৎ নিজে উপলব্ধি করি, এভাবে বেশি দিন চলতে পারে না। আমাকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। শুরু হয় আমার বদলে যাওয়া। নিজের চেষ্টায় আর মা-বাবা, শিক্ষকদের আন্তরিক সহযোগিতায় অষ্টম শ্রেণিতেও বৃত্তি পাই। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বিভাগ থেকে সম্মিলিত মেধাতালিকায় অষ্টম স্থান অধিকার করি। নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। সেখান থেকেই সম্পন্ন করি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।
বাবাকে আমরা পেয়েছি খুব কাছের বন্ধু হিসেবে। লেখাপড়ায় তিনি প্রবলভাবে উৎসাহ দিতেন। আরেকজন শিক্ষকের নামোল্লেখ না করলেই নয়। তিনি আমার ইংরেজি বিষয়ের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মির্জা নজরুল ইসলাম। তিনি আমার মাঝে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলেছিলেন, শিখিয়েছিলেন স্বপ্ন দেখতে। পারিবারিক দিক দেকে পড়াশোনার জন্য কখনোই কোন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হইনি। তবে কলেজ জীবনে এক বখাটে ছেলে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে রোজ আমাকে উত্যক্ত করতো। এর মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকে। সেসময় জীবন একেবারে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। শেষপর্যন্ত নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সাময়িকভাবে কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে মনের দিক থেকে প্রচণ্ড আত্মপ্রত্যয়ী ছিলাম। শিক্ষকদের সহযোগিতা পেয়েছি সবসময়। মেধাতালিকায় স্থান না করতে পারলেও কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হই এইচএসসি পরীক্ষায়। আজও মনে হয়, সেই বখাটের উপদ্রব না থাকলে এইচএসসি পরীক্ষায় হয়তো আরও ভালো ফলাফল করতে পারতাম।
প্রশ্ন: কেমন ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন? ক্যারিয়ার যাত্রার গল্প ও জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো শুনতে চাই।
নিশাত সুলতানা: এসএসসি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান লাভ করার পর সাংবাদিকরা যখন প্রশ্ন করেছিলেন, ‘বড় হয়ে কী হতে চাই?’ উত্তর দিয়েছিলাম, ‘ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে চাই।’ আমার ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল একদম সেরকম। স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েই আমি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেই। তবে বাবা চাইতেন আমি সরকারি কর্মকর্তা হবো। অবশেষে বাবার ইচ্ছাও পূরণ হয়। ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কিছুদিন কাজ করি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। কিন্তু আমার সৃজনশীল মন আর সবসময় নতুন কিছু করার তাড়না সরকারি চাকরির নিয়মতান্ত্রিক জীবন মেনে নেয়নি। ছয় মাসের মাথায় আমি ছেড়ে দেই সরকারি চাকরি। পরবর্তীতে যোগ দেই ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচিতে। ভালোবেসে ফেলি তৃণমূল পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষার জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মজীবন। পরবর্তীতে সম্পৃক্ত হয়েছি কনসার্ন ইউনিভার্সেল এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের মতো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সাথে। এখন কাজ করছি ব্র্যাক জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের কর্মসূচি সমন্বয়কারী হিসেবে। তবে আমি শুধু অফিসের কর্মকাণ্ডে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখিনি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখি আর শিশুদের জন্য লিখি গল্পের বই।
প্রশ্ন: যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, সেখানে কী কী দায়িত্ব পালন করতে হয়?
নিশাত সুলতানা: বর্তমানে আমি ব্র্যাক জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রামের কর্মসূচি সমন্বয়কারী হিসেবে কর্মরত আছি। ব্র্যাক সূচনালগ্ন থেকেই নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করছে। ব্র্যাক এমন একটি বৈষম্যমুক্ত পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে প্রতিটি মানুষ তার সম্ভাবনা বিকাশের সুযোগ লাভ করবে। এটি বাস্তবায়নে একদিকে যেমন সহিংসতামুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি, তেমনি প্রয়োজন নারী ও পুরুষের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা। আরও প্রয়োজন নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পুরুষদের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ। নারীর ক্ষমতায়নকে বিচ্ছিন্ন কোন ইস্যু হিসেবে বিবেচনা না করে প্রয়োজন এই লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বিত অংশগ্রহণ। জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি প্রোগ্রাম মূলত ব্র্যাকের এই লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানকারী বিশেষ একটি টেকনিক্যাল গ্রুপ। জেন্ডার সমতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক নীতিমালা তৈরিতে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা, সুশীলসমাজ এবং নীতি নির্ধারকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করা আমার দায়িত্বের অন্যতম বড় একটি ক্ষেত্র। এছাড়াও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যেসব প্রতিষ্ঠান তৃণমূল ও জাতীয় পর্যায়ে কাজ করছে, তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হয় এবং ব্র্যাকের পক্ষে সমন্বিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয়।
প্রশ্ন: যারা আপনার মতো উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে আপনার পরামর্শ কী?
নিশাত সুলতানা: উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করাটা সব সময়ই খুব চ্যালেঞ্জিং। একটা সময় ছিল যখন আর্থ-সামাজিক দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে ছিল। তখন উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কাজ করার পরিধি ছিল অনেক বেশি। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে গেছে, বদলে গেছে মানুষের চাহিদার ধরন। এখন কাজ যে একেবারে কমে গেছে তা কিন্তু নয়। তবে কাজের ধরন পাল্টে গেছে। আগে যেখানে সংখ্যা গুরুত্ব পেত, আজ সেখানে গুরুত্ব পায় সেবার গুণগত মান। মনে রাখা প্রয়োজন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে মাথায় রেখে স্থায়ী উন্নতির জন্য প্রয়োজন ভারসাম্যপূর্ণ, বাস্তবসম্পন্ন ও সময়োপযোগী পরিকল্পনা। যারা নতুন করে উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করতে চাইছেন, তাদের এ বিষয়গুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন। মানুষের স্থায়ী উন্নয়ন আর আচরণগত পরিবর্তনে প্রয়োজন গবেষণালব্ধ জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ আর সৃজনশীল স্মার্ট চিন্তা-ভাবনার সমন্বয়। তৃণমূল পর্যায়ে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করতে হলে প্রয়োজন মানবতাবোধ, দেশপ্রেম আর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।
প্রশ্ন: কারো কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কি?
নিশাত সুলতানা: আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হলেন আমার মা সেলিমা বানু। তিনি অসম্ভব প্রতিভাময়, প্রগতিশীল এবং মুক্তচিন্তার একজন মানুষ। তিনি আমাকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে সম্ভাবনার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানিয়েছেন। তবে কখনোই তার কোন ইচ্ছা-অনিচ্ছা আমার উপর চাপিয়ে দেননি। তিনি চেয়েছেন আমি যেন আমার মতো করেই জীবনটা গড়ে তুলতে পারি। আমার স্বকীয়তায় বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। তিনি আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছেন, আমার উপর আস্থা রেখেছেন। বাবা কখনো মাকে বাধা দেননি; বরং সহায়তা করেছেন। বিয়ের পর আমার জীবনসঙ্গী মোল্লা ওমর শরীফ আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, আমাকে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে শ্রদ্ধা করেন, সম্মান দেন। এ দু’জনের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।
প্রশ্ন: ক্যারিয়ারের পাশাপাশি অন্যান্য অর্জন সম্পর্কে জানতে চাই।
নিশাত সুলতানা: আমি বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখি। এছাড়া শিশুদের জন্য গল্প লিখি, যা বিভিন্ন শিশুতোষ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয়। শিশুদের জন্য এ পর্যন্ত আমার মোট সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘নিপুর রঙিন একদিন’ বইটি ২০১৮ সালে সৃজনশীল শাখায় ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। শিশুদের জন্য অনেক বেশি গল্প লিখতে চাই। কারণ শিশুদের জন্য লিখতে আমি সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এর বাইরেও রেডিও-টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশগ্রহণ করি।
প্রশ্ন: দেশ নিয়ে কী কী স্বপ্ন দেখছেন?
নিশাত সুলতানা: আমি সবচেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখি শিশুদের নিয়ে। তরুণ প্রজন্ম নিয়েও আমি দারুণ আশাবাদী। অনেকেই তরুণদের নিয়ে হতাশার কথা বলেন। কিন্তু আমার মনে হয়, তরুণরা সঠিক পথেই আছেন। সম্প্রতি সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে ছাত্র আন্দোলন আমাদের নিশ্চিতভাবেই জানিয়ে দিয়েছে সত্য সুন্দর আর কল্যাণের জন্য তারা প্রয়োজনে গর্জে উঠতে জানে। এখন প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহারকে নিশ্চিত করা। আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি বিকল্প ক্ষেত্র যেমন কারিগরী শিক্ষাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন নিজের দক্ষতা আর জ্ঞানকে যুগপোযোগী রাখা। এখনকার ছেলে-মেয়েদের বই পড়ার অভ্যাস নেই বললেই চলে। আমার মনে হয়, মনোজগতের ইতিবাচক পরিবর্তনে বই পড়ার অভ্যাসের কোন বিকল্প নেই। দেশ নিয়ে তাই অনেক ইতিবাচক স্বপ্ন দেখি আমি।