সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও আমাদের সন্তান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) চলমান সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিকসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোয় তালা দেওয়া হয়েছে। ফলে অধিকাংশ বিভাগেই বন্ধ ছিল ক্লাস-পরীক্ষা। বিঘ্ন ঘটেছে প্রাশসনিক কার্যক্রমেও। অন্যদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও নেমেছে রাজপথের আন্দোলনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের নানামুখী সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর সঙ্গে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হয়ে কথা বলেছেন ইলিয়াস শান্ত—
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কেমন আছেন?
এ কে এম গোলাম রাব্বানী: আলহামদুলিল্লাহ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাবির চলমান আন্দোলন নিয়ে কী বলবেন?
এ কে এম গোলাম রব্বানী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অধিকার নিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সব সময় সবার আছে। তবে যারা নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে অন্যের কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করে; বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ জাতি এটা আশা করে না। আমাদের আলোচনার দরজা সব সময় খোলা, আমরা শুনতে চাই কার কী বক্তব্য আছে? আমরা একসঙ্গে বসে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে অগ্রসর হতে চাই। এভাবে এক শিক্ষার্থী হিসেবে অন্য শিক্ষার্থীর জীবন বিপন্ন করা উচিত নয়। তাছাড়া তাদের সেশন জটিলতার মধ্যে ফেলে দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা হতে না দেওয়াটাও অন্যায়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাবি শিক্ষার্থীরা কেন শুধু সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল চাইছে, অন্য প্রতিষ্ঠান কেন নয়?
এ কে এম গোলাম রব্বানী: সাত কলেজ কিংবা অন্য অনেক প্রতিষ্ঠান ঢাবির অধিভুক্ত। এটা নতুন নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে এটার প্রচলন আছে। এ বিষয় নিয়ে তাদের কোন বক্তব্য থাকলে ‘সেটা ওপেন’। তারা এসে আমাদের সাথে কথা বলবে, আলোচনার টেবিলে বসবে। সে সময় কোথায় কোথায় তাদের বক্তব্য আছে সেগুলো তারা উপস্থাপন করবে। এ সুযোগ এবং এ পন্থা সবসময় খোলা আছে।
যেখানে আলাপ আলোচনা করার বক্তব্য উপস্থাপনের দ্বার উম্মুক্ত; সেখানে ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে চট করে চরম পন্থায় চলে যাওয়া কোনভাবেই কাম্য না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাবি ও সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা এখন মুখোমুখি অবস্থানে। ফেসবুকে রীতিমতো স্নায়ু যুদ্ধ চলছে বলা যায়, মাঠের আন্দোলন তো আছেই। এ বিষয়ে কী বলেবেন?
এ কে এম গোলাম রব্বানী: কারো মুখোমুখী হওয়া, পথ অবরোধ করা কিংবা জনজীবনে কোন ধরনের দুর্ভোগ সৃষ্টি করা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার কোনভাবেই প্রত্যাশা করে না। আমরা বারবার বলছি তাদের যে বক্তব্যই থাক; তাদের যৌক্তিক অবস্থানগুলো কী- সেগুলো আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করুক। আমরাও শুনি। আমি আশা করি আলোচনা এবং সহযোগিতার মাধ্যমে নিশ্চয়ই সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারব। এ সময় তিনি আন্দোলন, ভবনে তালা ঝুলিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন করে ক্লাস-পরীক্ষায় বাঁধার সৃষ্টি না করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহবান জানান।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। ক’দিন পরপর তারা রাজপথে নেমে আন্দোলন করে। আবার আশ্বাসে তারা ফিরে যায়। অধিভুক্তির এতদিনেও কেন তারা যৌক্তিক সমাধান না পেয়ে আসছে?
এ কে এম গোলাম রব্বানী: তারা তো আলোচনার টেবিলেই বসছে না। আমরা তো শুনতেই চাচ্ছি। তাদের বক্তব্য কোথায়। আমরা তো তাদেরকে ডাকছি। কারণ তারাও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য, আমাদের সন্তান। আমরা শিক্ষক, ছাত্র এবং প্রশাসন মিলেই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। আমরা একযোগে কাজ করতে চাই। সবার বক্তব্য শুনতে চাই। কারো গতিরোধ করা কিংবা বাধার মাধ্যমে নয়, আলোচনার মাধ্যমেই আমরা সমাধানে আসব।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: স্যার, আপনাকে ধন্যবাদ।
এ কে এম গোলাম রব্বানী: ধন্যবাদ।