সহাবস্থান ও প্রার্থীদের যোগ্যতা শিথিলকে প্রাধান্য দেবে ছাত্রদল

সুলতান আহমেদ রাহী
সুলতান আহমেদ রাহী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আগামী সপ্তাহে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ছাত্রসংগঠনগুলো নড়েচড়ে বসেছে। ক্রীয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অন্যতম। তারাও থাকবে আলোচনায়। কোন্ বিষয়ে প্রাধান্য দিবে সংগঠনটির ছাত্র নেতারা? সে বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ রাহী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি- এস এফ রহমান

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আগামী সপ্তাহে আলোচনায় বসার ঘোষণা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য। সেখানে অংশগ্রহণ করবেন কিনা?

সুলতান আহমেদ রাহী: জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে বসবেন। অনেক কিছুই তো বলছেন। আগে তারিখ ঠিক হোক।  প্রশাসন ডাকলে অবশ্যই আমরা আলোচনায় অংশ নিব।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আলোচনায় প্রশাসনের কাছে সবারই দাবি থাকবে নিশ্চয়ই। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে কি দাবি থাকবে?

সুলতান আহমেদ রাহী: ছাত্রদলের দাবির মধ্যে সবচেয়ে আগে থাকবে পরিবেশ পরিষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার বিষয়টি। রাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব শর্ত হিসেবে বিষয়টি গঠনতন্ত্রে সংযোজন করতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রী, যারা ভোটার হওয়ার উপযুক্ত বলে গণ্য হবে তাদের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা মূলক বিদ্যমান ধারা সংশোধন করে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। হলে হলে ভোট গ্রহণের পরিবর্তে রাকসুও হল সংসদের ভোট কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষদের ভবনে গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আর কোনো দাবি থাকবে কি?

সুলতান আহমেদ রাহী: স্বচ্ছ-সুষ্ঠু ও নিরাপদ ভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রক্রিয়া (ভোট গ্রহণের গোপন বুথ ব্যতিরেকে) এবং সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে। রাকসু নির্বাচন স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সকল ছাত্র সংগঠনের কাছে গ্রহণযোগ্য শিক্ষকদের সমন্বয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। রাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তাফসিল ঘোষণার পর ছাত্র সংগঠনগুলো কোনো প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের কোন প্রকার হয়রানি, মামলা দেওয়া অথবা  গ্রেফতার না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: রাকসুর গঠনতন্ত্রে তো যারা পাশ করে বের হয়ে গেছেন তারা সদস্য বা প্রার্থী হতে পারবেন না। তাহলে কিভাবে নির্বাচনে প্রার্থী দিবেন?

সুলতান আহমেদ রাহী: যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবির মধ্যে আরও একটি বিষয় থাকবে যাতে প্রার্থী ও সদস্য হওয়ার যোগ্যতা শিথিল করা হয়। প্রার্থীতার জন্য এমফিল পিএইচডি করা শিক্ষার্থীরাও যাতে অংশ নিতে পারে।  আর প্রার্থী ২৯ বছর এর মধ্যে হবে। আশা করব সব সংগঠন যাতে অংশ নিতে পারে সেদিক লক্ষ্য রেখেই নির্বাচনের আয়োজন করবে। যদি না করে তাহলে প্রার্থী জটিলতায় পড়তে হবে। তাই বিকল্প প্রার্থী ভাবা লাগবে। অবশ্যই বিকল্প প্রার্থী রাখা হবে। সকলে যেভাবে অংশ নিবে আমরা ব্যতিক্রম কিছু করব না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ছাত্রলীগসহ অন্য ছাত্রসংগঠনগুলো চাচ্ছে না। তাই শিবিরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে আপনাদের অবস্থান কি?

সুলতান আহমেদ রাহী: শিবিরের বিষয়ে আমরা আগ্রহী না। সেটা প্রশাসন বুঝবে। আমরা চাই সবাই ভোট দিক। শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারে। শিবির নির্বাচন করলেও আমাদের সমস্যা নাই। না করলেও নাই। প্রশাসন না চাইলে আমরাও চাই না। তাদের কারও সাথে আমাদের সংযোগ নাই। তারা আলাদা আমরা আলাদা।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কতদিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন হোক চাচ্ছেন?

সুলতান আহমেদ রাহী: নির্বাচন নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে সমান সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে কিনা তার উপর। আগে সকলের সহাবস্থান ঠিক করুক। তাহলে আমরা আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ করব। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের উপর নির্ভর করবে রাকসু নির্বাচন হবে কি হবে না।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ক্যাম্পাসে সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই নির্বাচনের আয়োজন হলে প্রচার প্রচারণা কিভাবে থাকবেন?

সুলতান আহমেদ রাহী: আমাদের প্রধান লক্ষ্য রাকসু সচল করা। এটা শিক্ষার্থীদের অধিকার। প্রশাসন যদি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, পুলিশ বা ক্ষমতাসীন দলের কারও দ্বারা দমনের চেষ্টা না চালায়, ক্যাম্পাসে ভোট চাইতে পারব। তাহলে ক্যাম্পাসে মুভ করা শুরু করব।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে।

সুলতান আহমেদ রাহী: আপনাকেও ধন্যবাদ।

 


সর্বশেষ সংবাদ