মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না
বাংলাদেশে টানা ৩য় বারের মতো সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয় লাভ করে দলটি। দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে একক আধিপত্য নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। নির্বাচন পরবর্তী সময়, শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে ছাত্রলীগের ভুমিকা সহ বিভিন্ন বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ। সাক্ষাতকার নিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্বদ্যিালয প্রতিনিধি- শাহাদাত বিপ্লব
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শাখা ছাত্রলীগের আগামীদিনের কর্মপরিকল্পনা কি?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: সর্বপ্রথম আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করবো। যেন শিক্ষার পরিবেশ কোনভাবে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি থাকবে। এছাড়া আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলোর সাথে ছিলাম। যেমন, পরিবহণ সংকট, মাস্টার্সের ভর্তি ফি কমানো, ইন্টারনেট সংযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে ছিলাম। শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের অধিকার আদায় করে নিতে পারে সে লক্ষ্যে নিয়মিত কাজ করছে ছাত্রলীগ। ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের যেকোন ন্যায্য দাবির সাথে থাকবে ছাত্রলীগ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ক্যাম্পাসে অন্য কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নেই। এককেন্দ্রিক রাজনীতির চর্চাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: আসলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর সাংগঠনিক ভিত্তি নেই। শিবিরের প্রকাশ্য কোন কমিটি নেই। আর ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতারই ছাত্রত্ব নেই। ক্যাম্পাসে কারা কি জানিনা, তবে এটুকু বলবো সবাই নিরাপদে ক্লাস করছে। এক্ষেত্রে কারো কোন সমস্যা হচ্ছেনা। তবে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: মাদকের বিরুদ্ধে শাখা ছাত্রলীগের অবস্থান কি? প্রতিরোধে কি কি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাদক, সন্ত্রাস এবং দূর্নীতির বিরুদ্ধে একধরণের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। সে যেই হোক, কোন ছাড় দেয়া হবেনা। প্রয়োজনে যারা মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের হলের আবাসন সুবিধা বাতিলসহ যে কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের শরনাপন্ন হবে ছাত্রলীগ। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সকল ধরণের সহযোগীতা করা হবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিভিন্ন সময় নিজেদের অন্তঃকোন্দল, সাধারণ শিক্ষার্থী মারধর, সিনিয়রদের গায়ে হাত তোলা এবং লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন অপরাধে নেতা-কর্মীরা জড়িয়ে পড়ছে। এসবের বিরুদ্ধে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: দলীয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকবো। আর বিভিন্ন সময় সাধারণ শিক্ষার্থী মারধর ও লাঞ্ছনাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়ালে আমরা তাদের বিষয়ে বসে ব্যবস্থা নিয়েছি। অভ্যন্তরীণভাবে তাদের বিচার করেছি। ক্যাম্পাসে মারামারি আগের তুলনায় অনেকাংশে কমিয়ে এনেছি। সিনিয়রদের গায়ে হাত তোলা তো দূরে থাক বেয়াদবিকেও ছাড় দেয়া হবেনা।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতে পারে কি না? আপনার ভাবনা কি?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: অনেক বছর পর এবার ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। ডাকসু গঠন হলে আমরা প্রশাসনকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে বলবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠন হলে যোগ্য এবং জনপ্রিয়রা সুযোগ পাবে। এতে শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়নেও তারা সচেষ্ট থাকবে।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটি বলে আপনি মনে করেন?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এখানে সবাই তাদের অধিকারের কথা বলবে। কিন্তু বিভিন্ন বিষয়ে এখানে অনৈতিক হস্তক্ষেপ হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কারো দ্বারা প্ররোচিত না হওয়া এবং স্বাধীনভাবে চলতে পারা বড় চ্যালেঞ্জ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কি?
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: শিক্ষার্থীরা তাদের সকল ধরণের অধিকার বুঝে পাবে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল সিদ্ধান্ত প্রশাসন মেনে নিবে। প্রশাসনকেও শিক্ষার্থীদের সময় দিতে হবে। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী বান্ধব একটি ক্যাম্পাস গড়ে উঠুক এই প্রত্যাশাই থাকে সবসময়।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে।
ইলিয়াস হোসেন সবুজ: ডেইলি ক্যাম্পাস পরিবারকেও অনেক ধন্যবাদ।